আজকের সারাদেশ রিপোর্ট:
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ কোনো শর্ত মেনে ঋণ নিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আইনপ্রণেতা কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সংসদে একটি পয়েন্ট অব অর্ডারের ওপর ভিত্তি করে আইনপ্রণেতা মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশ এখন আইএমএফ থেকে ঋণ পেতে কিছু শর্ত পূরণ করছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে এবং ঋণের কারণে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করবে; যা দ্রব্যমূল্য বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির দিকে নিয়ে যাবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইএমএফ কেবল তখনই (কোনো দেশকে) ঋণ দেয়, যখন দেশটি ঋণ পরিশোধের যোগ্যতা অর্জন করে। আমরাতো তেমন কোনো শর্ততে ঋণ (আইএমএফ থেকে) নিচ্ছি না। আমরা তো বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমার প্রশ্ন হলো- পৃথিবীর কোনো দেশ গ্যাস আর বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয়? কেউ দেয় না।’ আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি এবং এর সরবরাহ বৃদ্ধি করেছি। কিন্তু, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে।’
“ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধের পর ইংল্যান্ড বিদ্যুতের দাম ১৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে। আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশ বাড়ালাম। পাইকারিতে গ্যাসের দাম কিছুটা বেড়েছে। এলএনজি আমরা যেটা ৬ ডলারে স্পট প্রাইসে কিনতাম, সেটা এখন ৬৮ ডলার। কত ভর্তুকি দেবে সরকার? সরকার যে ভর্তুকি দেবে, সেটা তো জনগণেরই টাকা।”
সারা বিশ্বেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নিম্ন ও মধ্যম মানুষের জন্য টিসিবির ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়ে দিয়েছি। যাতে তারা ভর্তুকি দেওয়া মূল্যে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্য কিনতে পারে। কৃষিতে আমরা ব্যাপক ভর্তুকি দিচ্ছি। স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না পড়ে, সেদিকে দৃষ্টি রেখে এই ব্যবস্থা করছি। কৃষিতে আমরা ব্যাপক ভর্তুকি দিচ্ছি। এখন যদি গ্যাস-বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে ৪০-৬০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, তাহলে সেটা কী করে দেব? ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। ইংল্যান্ডের মত দেশে এখন ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ হচ্ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। পৃথিবীর সব দেশে এই অবস্থা বিরাজমান। বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থায় পড়েনি।’