ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে আশুগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ এ ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি সভায় উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তৎপর থাকার জন্য বলা হয় নেতাকর্মীদের।
মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছফিউল্লাহ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা গত ১৫ জানুয়ারি আশুগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, ‘অনেকের সাথে তার (আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া) ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু ভোটের দিন আমরা কেউ ভোটকেন্দ্রে যাব না। কেউ যেন তার জন্য একটা ভোটও না চাই। দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যে সাত্তারের জন্য কাজ করবে, তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছফিউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘তিনি (রুমিন ফারহানা) তার কিছু কর্মীকে বলেছেন নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, তার জন্য আমরা যা যা করণীয়; প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। নির্বাচনে কে কাকে ভোট দেবে, সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। তবে ভোটটা যেন সুন্দর হয়, সেজন্য আমরা অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করব।’
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন মোট আটজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করলেও চার প্রার্থী ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম এবং জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। তারা চারজনই ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’ ছিলেন। তারা সরে দাঁড়ানোয় সাত্তারের জয়ে আর কোনো বাধা দেখছেন না ভোটাররা।
উল্লেখ্য, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য। তবে দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাত্তার। কিন্তু এরপরই দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজের ছেড়ে দেয়া আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়ন ফরম কিনেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে সাত্তারকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।