আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
রোজার প্রথম দিনেই জমে উঠেছে ঢাকার ইফতার বাজার। জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজু কাবাবসহ নানা চমকপ্রদ ও স্বাদের ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আর সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন ভোজনরসিক রোজাদারেরা।
দুপুরের আগে থেকে দোকানগুলোয় ইফতারের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে রেখেছেন। বিকেল থেকে দোকানের সামনে বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। বিকেল গড়াতেই শুরু হয় বেচাকেনা। চলবে ইফতারের আগ পর্যন্ত।
যার মধ্যে রয়েছে কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি কাবাব, গ্রিল চিকেন, বুন্দিয়া, গরুর কালো ভুনা, কাচ্চি, মগজ ভুনা, চিংড়ি বল, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন বটি কবাব, দই চিড়া। রয়েছে পেস্তা বাদাম শরবত, বেলের শরবত, তরমুজের শরবতসহ অসংখ্য পানীয়র আয়োজন।
এছাড়া রোজার প্রথম দিনে ফলের প্রতিও মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। দুপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হতে দেখা যায় কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, আপেল, আঙ্গুর ও বিভিন্ন ধরনের খেজুর। ইফতারে খেজুর ও ফলের চাহিদা বেশি থাকায় এসব দোকানে বেশি ভিড় দেখা যায়। তবে ইফতার সামগ্রী ক্রয় করতে এসে কোন ধরনের বিশঙ্খলা যাতে তৈরি না হয় সেজন্য বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।
দোকানিরা জানান, প্রতিবারের মতো এবারও ইফতারসামগ্রীতে রাখা যাবে নানা ধরনের বাহারি সব খাবার। স্পেশালের মধ্যে রয়েছে- মোরগের রোস্ট, কাবাব, কোয়েল-কবুতর ভুনা, মোরগ পোলাও, বটি কাবাব, টিকিয়া কাবাব, কোফতা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের কাবাব, বিফ আখনি, মুরগির আখনি, হালুয়া, হালিম, কাশ্মীরি শরবত, ইসবগুলের ভূষি, পরোটাসহ অর্ধশতাধিক জাতের ইফতারসামগ্রী।
পুরান ঢাকা এলাকায় ইফতার কিনতে এসেছেন জোবায়ের আহমদ। তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রথম রোজায় তিনি এখানে ইফতার কিনতে আসেন। এবারও এসেছেন। তবে এবারের ইফতারির দাম একটু বেশি বলে মনে করছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার শাহী মসজিদের সামনে যেন পা ফেলার জায়গা নেই। ক্রেতা-বিক্রেতার হই-হুল্লোড়ে মুখরিত পুরো ইফতার বাজার। চলছে বেচাকেনাও। এখানকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিক্কাসহ প্রায় ১০-১৫ ধরনের কাবার। কাবাবের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডিম চপ, পিয়াজু, চুলা, কাবাবসহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী। মিষ্টির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে শাহী জিলাপি, মিষ্টি, দইসহ নানা কিছু।
চকবাজারে নিয়মিত হোটেল-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি বসেছে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকানও। সেসব দোকানে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ডিম চপ, দই বড়া, ডাবলির ঘুঘনি, মিষ্টি, শাহী হালিম, গরু-মুরগি-খাসির হালিম, কাবাব, সবজি পাকোড়া, মাংসের চপের পাশাপাশি অনেকে তাদের নিজস্ব বিশেষ আয়োজন নিয়ে বসেছেন।
পুরান ঢাকায় প্রতিকেজি দেশি চিকেন ও মাটন হালিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা করে। মেজবানি গরুর মাংস কেজি ১ হাজার ৩০০ টাকা। জিলাপি ১০০ গ্রাম ১০০ টাকা, কিসমিস ফিরনি ৫০০ গ্রাম ৩২৫ টাকা, স্পেশাল পরোটা প্রতিটি ৭০ টাকা, দেশি চিকেন তান্দুরি প্রতি পিস ৩০০ টাকা, চিকেন ললিপপ ১০০ টাকা, বিফ বটি কাবাব প্রতি অর্ডার ২২০ টাকা, বিফ কাচ্চি বিরিয়ানি প্রতি প্লেট ৪৫০ টাকা, মাটন কাচ্চি ৫০০ টাকা, ফিশ টিক্কা কাবাব ৪ পিস ১ হাজার টাকা, টক দই ৫০০ গ্রাম ২৫০ টাকা, গরুর নলা প্রতি পিস ২০০ টাকা, মাটন চুইঝাল প্রতি প্লেট ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।