আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রাম-৮ আসনে (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) উপনির্বাচনে নোমান আল মাহমুদের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়াকে অনেকেই চমক হিসেবে দেখছেন আবার কেউ কেউ বলছেন-ত্যাগের স্বীকৃতি।
মহানগর আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক সামলেছেন নগর যুবলীগের সাবেক সভাপতির পদ। ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্যও সবমিলিয়ে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বয়স ৫০ বছরেরও বেশি। শেষ বয়সে এসে তাই হয়তো এই মূল্যায়ন তার প্রাপ্যই ছিল।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে আগের নির্বাচনেও নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়ন না পেলেও দলীয় সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি পূর্ববর্তী দুই নির্বাচনে যথাক্রমে মইনুদ্দিন খান বাদল ও মোছলেম উদ্দিনআহমেদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সবমিলিয়ে আসনটির মাঠ পর্যায়ের অবস্থান সম্পর্কে তাঁর ব্যাপক ধারণা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড নোমান আল মাহমুদকে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেছেন বলে মনে করছেনচট্টগ্রামের রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা।
নোমান আল মাহমুদ সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবনেতা হিসেবেও অন্তত ৫ দশক ধরে আওয়ামী লীগ পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৭১-৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭৪-৭৭ সাল পর্যন্ত মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন নোমান আল মাহমুদ। এরপরই যুবলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৭৯ সালে যুবলীগের মহানগর কমিটির কাজী ইনামুল হক দানু- খালেকুজ্জামান কমিটির কো ‘অপশন মেম্বার’ হন এই নেতা। কেন্দ্রীয় যুবলীগের মোস্তফা মহসিন মন্টু ও ভুলু সরকারের কমিটির সময়কালে ১৯৮৭ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর যুবলীগ সভাপতি নির্বাচিত হন নোমান আল মাহমুদ। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে শেখ সেলিম -কাজী ইকবালের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে জাহাঙ্গীর কবির নানক- মির্জা আজম কমিটির সদস্যও হয়েছিলেন এই রাজনীতিক।
নোমান আল মাহমুদের মনোনয়নের পর আওয়ামী লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাঁকে নিয়ে নানা কথা লিখছেন। সেখানে কেউ এই মনোনয়নকে চমক হিসেবে দেখছেন। আবার বেশিরভাগই বলছেন এত বছরের ত্যাগের স্বীকৃতি পেলেন নোমান আল মাহমুদ।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এই আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ মারা যান।এতে চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ২৭ এপ্রিল এ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটগ্রহণ হবে।
শূণ্য হওয়া এই আসনে শুরু থেকেই আলোচনায় ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।তবে ২৭ জন দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও ‘সবুজ সংকেত’ না পাওয়ায় মনোনয়ন নেননি এই নেতা। তিনি মনোনয়ন না পেলেও অবশ্য তাঁর অনুসারী হিসেবে পরিচিত নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন পেলেন। কেননা চার দশকেরও বেশী সময় ধরে দুটি ধারায় বিভক্ত চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নোমান আল মাহমুদ আ জ ম নাছির উদ্দীনের পক্ষের হয়েই নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন।