আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
রাহুল গান্ধীকে সংসদে অযোগ্য ঘোষণার সিদ্ধান্ত বিজেপি ‘আত্মঘাতী গোল’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। শনিবার (২৫ মার্চ) পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়, পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে থারুর লোকসভা সচিবালয়ের সমালোচনা করেন।
এই ঘটনায় ভারতীয় গণতন্ত্রের খারাপ পরিস্থিতি সারাবিশ্বের সামনে উঠে এসেছে বলে মন্তব্য করেন থারুন। তিনি বলেন, “এই ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত লাভবান হবে বিরোধী দল এবং রাহুল গান্ধী। এতে করে বিজেপির জন্য বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলো।”
“সব জায়গায় রাহুল গান্ধীর খবরই শিরোনামে। এর জন্য বিজেপিকে ফল ভোগ করতে হবে। কারণ, এতে করে বিরোধী ঐক্য আরো জমাট হওয়ার সুযোগ হলো, যা এতদিন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল না।”
তিনি আরো বলেন, এমনকি কংগ্রেস বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলোও এখন এই ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গণতন্ত্রের অপমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে তারা।
গুজরাটের সুরাট আদালতের রায় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই কংগ্রেস সাংসদ ৷ তার কথায়, “আসলে এমন কিছু আছে, যা এই বিষয়ে ঠিক বলে মনে হচ্ছে না।” তিনি দাবি করেন, মামলাকারী আগেই এই মামলায় গুজরাট হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে স্থগিতাদেশ এনেছিলেন। কিন্তু যখনই সুরাট আদালতে এই মামলার বিচারক পরিবর্তন হয়ে গেল, তখনই গুজরাট হাইকোর্ট থেকে মামলা তুলে নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন থারুর।
তিনি বলেন, “যে লোক স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন, তিনি এসে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন এবং মামলাটি পুনরায় শুরু করেন। আর কয়েক দিনের মধ্যে এই রায় পেয়ে যান।”
একই সঙ্গে তিনি রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে লোকসভার সচিবালয়ের পদক্ষেপে পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে বলেও দাবি করেন ৷ তিনি বলেন, সাংসদ পদ খারিজের অধিকার সংবিধান একমাত্র রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে। অথচ লোকসভার সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এই নিয়ে পরামর্শ করা হয়েছে কি-না, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। সেইসঙ্গে এত দ্রুত কেন পদ খারিজ করা হল, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় এক জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, “সব মোদিরা কেন চোর হয়?” তিনি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে, নীরব মোদি, ললিত মোদিকে বোঝাতে এই মন্তব্য করেছিলেন। তবে এতে ‘মোদি’ পদবীর সবাইকে অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এই মর্মে সুরাটের এক আদালতে রাহুল গান্ধীর নামে মামলা হয়। গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট জেলার দায়রা আদালত কংগ্রেস সাংসদ রাহুলকে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ হাজার টাকার জরিমানার সাজা শোনায়।