আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশের ঢাকা শহরের দূষিত বায়ুর ৩০ শতাংশ আসে প্রতিবেশি ভারত থেকে। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশের ওপর দিয়ে একই মেঘমালা উড়ে যাচ্ছে। ওই মেঘের মধ্যে দূষিত বায়ু গিয়েও আশ্রয় নিচ্ছে। এরফলে এই দেশগুলোতে দূষিত বায়ু ছড়াচ্ছে। নিজ দেশের ভেতরের দূষিত বায়ুর পাশাপাশি অন্য দেশগুলো থেকে আসা বায়ুর কারণে মানুষ নানা রোগবালাই ও কষ্টে ভুগছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘নির্মল বায়ুর জন্য চেষ্টা: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণায় বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে শক্তিশালী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরগুলোর বায়ু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ৬ থেকে ২৫ গুণ মান খারাপ। দূষিত শহরের মধ্যে অন্যতম শীর্ষে ঢাকা শহর। আর ঢাকার দূষিত বায়ুর ৩০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। তবে ঢাকার বাইরের শহরগুলো থেকেও ৪০ শতাংশ দূষিত বায়ু প্রবাহিত হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। অন্যদিকে বিশ্বের দূষিত বায়ুর শীর্ষ ১০টি শহরের ৯টি দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। ঢাকা শহর এর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে যত অকালমৃত্যু হয়, তার ২০ শতাংশ ঘটে বায়ুদূষণের কারণে। ধারাবাহিক শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়া, ক্যানসার, হৃদ্রোগ ও কোভিড-১৯-এর মতো রোগ বায়ুদূষণের কারণে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ইয়েন জু ই-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাবডউলাই সেক, বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাবিব, বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর সাউথ এশিয়া ইন্ট্রডেশন সিসিলি ফ্রুম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সঠিক পদক্ষেপ এবং নীতি নিলে বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দূষিত বায়ু প্রবাহিত হয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায়। ফলে দেশগুলোর মধ্যে আন্তসীমান্ত সম্পর্ক এবং সহযোগিতা বাড়াতে না পারলে বায়ুদূষণ রোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎস হচ্ছে এখন নির্মাণকাজ। সরকার আইন করে পোড়ানো ইট পর্যায়ক্রমে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। ব্লক ইট ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এখন পর্যন্ত তা ব্যবহার করছে না; বরং সরকারি প্রকল্পগুলো বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। ফলে সরকারকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে।