আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন :
মাথায় টুপি। গায়ে গেঞ্জি। হাতে কাজ করার সামগ্রী। কাজও করছেন ইট-সিমেন্টের। দেখে মনে হবে তিনি একজন রাজমিস্ত্রি। আসলে তিনি রাজমিস্ত্রি নন, তিনি একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি তিনি এই করছেন কাজ। ১ মাস ধরে শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
গত বছরের জুন মাসে হাতপাখা প্রতিক নিয়ে পটুয়াখালীর ধুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন হাফেজ আবদুর রহিম। শুরু থেকেই তিনি চেষ্টা করছেন ইউনিয়াবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে। পরে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের ২৫ ফুটের সড়ক, টয়লেট ও ওজুখানা নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ পান মাত্র দেড় লাখ টাকা। বাজেট স্বল্প হওয়ায় তিনি নিজেই শ্রমিক নিয়ে শুরু করেন রাজমিস্ত্রির কাজ।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে নিজে কাজ করে তৈরি করেন এসব স্থাপনা। এর আগে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুকুর ভরাট ও একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। চেয়ারম্যান হওয়ার আগেও তিনি শ্রমিকদের দ্বারা এলাকায় কিছু মসজিদ এবং মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন।
বর্তমানে শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করায় অনেকটা খুশি সহযোগী শ্রমিকরা। চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাজ করা শ্রমিক আলী হোসেন জানান, সকালে আমরা কাজ শুরু করার আগেই চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে এসে উপস্তিত হন এবং কাজ শুরু করে দেন। তার সঙ্গে কাজ করে আমরা গর্বিত। কারণ তিনি সন্ধ্যায় কাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে মজুরি দিয়ে দেন।
ধুলাসার ইউনিয়নের চাপলী বাজারের সত্তরোর্ধ্ব নেছার মিয়া জানান, চেয়ারম্যান ১ মাস ধরে শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। এ রকমের চেয়ারম্যান আমি জীবনেও দেখিনি। দেশের সব চেয়ারম্যান যদি জনগণের সেবায় এ রকম কাজ করত, তাহলে দেশটা আরও এগিয়ে যেতো।
ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফেজ আবদুর রহিম জানান, সড়ক, টয়লেট এবং ওজুখানার জন্য মাত্র দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এ টাকা দিয়ে মজবুতভাবে এসব স্থাপনা তৈরি করা সম্ভব না। আর আমি আগেই কিছু মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করেছি। সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে সহায়তা করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আমি শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করে ইউনিয়ন পরিষদের মসজিদ, টয়লেট এবং ওজুখানা নির্মাণ করেছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আপাতত দেখে মনে হচ্ছে চেয়ারম্যান হাফেজ আবদুর রহিম কাজটি খুব ভালোই করছেন। তবে নতুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দাপ্তরিক কাজে আরও মনযোগী হতে হবে।