দুপুর ১২:৫৬, বুধবার, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী সপ্তাহেই স্বস্তি মিলতে পারে বিদ্যুতে

আজকের সারাদেশ ডেস্ক:

একদিকে জ্বালানি সংকটে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে বিদ্যুত কেন্দ্র। অন্যদিকে চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে বিদ্যুতের চিাহিদা বাড়লেও কমছে উৎপাদন। তবে এমন পরিস্থিতির অবসান হতে পারে শিগগির। জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে নতুন করে ১৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত। এরমধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট পাওয়া যাবে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগ্রুপ এস আলমের নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। ৩০০ মেগাওয়াট বাড়তি হিসেবে আসতে পারে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। বাকী ১০০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত খরচে তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে উৎপাদন করবে সরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে তাপমাত্রা, দেশের কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আগামী তিন দিন বঙ্গোপসাগর থেকে মৌসুমি বায়ুও দেশের স্থলভাগের দিকে প্রবেশ করতে শুরু করবে। ফলে তীব্র দাবদাহের দাপট কমতে শুরু করবে। এতে বিদ্যুতের চাহিদাও কমবে। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের অস্বস্তি বেশ খানিকটা দূর হবে। আর ২৫ জুন থেকে দেশের বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা ফের চালু হলে পরিস্থিতি পুরোটাই পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ চলমান বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে বলেন, ‘আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। আদানি থেকে বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এস আলমের কেন্দ্রটি থেকে আসবে ৫০০ মেগাওয়াট। তেলচালিত কেন্দ্রগুলো আরও বেশি চালাব। এতে সব মিলিয়ে বাড়তি প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। প্রয়োজনে আমরা লোকসান করে হলেও বেশি সময় তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু রাখব। মানুষ যাতে কষ্ট না পায় আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমলে স্থাপিত বিদ্যুতের ক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট, সেটি এখন ২৪ হাজার ১৪৩ মেগাওয়াট। সে সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো সর্বোচ্চ ৩ হাজার মেগাওয়াটের মতো। আর সারা দেশে ৩৫ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল। খোদ ঢাকায় ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। আমরা এই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করেছি। দেশে শত ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ এই সরকারের আমলে হয়েছে। যেহেতু বিদ্যুতের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে সে কারণে মানুষের কাছে লোডশেডিং কষ্টের। তারা বিএনপি আমলের লোডশেডিং দেখতে চায় না। আমরা পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করছি। দ্রুতই বিদ্যুতের পরিস্থিতির সমাধান হবে।’

এদিকে দেশীয় উদ্যোক্তা এস আলম ও চীনের সেপকোর মালিকানায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তৈরি এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৬৬০ মেগাওয়অট বিদ্যুত সরবারহের কথা জানালেও ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ নিতে পারছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ করতে না পারা ই এর কারন।

৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট গত ২৫ মে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদনে এসেছে। এ সময় কেন্দ্রটি ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। আগামী ১৩ জুন থেকে কেন্দ্রটি ৫০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।

এসএস পাওয়ারের কেন্দ্রটিতে কয়লার যথেষ্ট মজুতও রয়েছে। কেন্দ্রটিতে প্রায় ৮৪ হাজার টন কয়লার মজুত রয়েছে। ফলে একটানা কেন্দ্রটি চালাতেও জ্বালানি সংকটে পড়তে হবে না।

অন্যদিকে ভারতের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ আদানির ১৪৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৭৪৯ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট উৎপাদনে এসেছে বেশ কয়েক মাস। দ্বিতীয় ইউনিটটি পরীক্ষামূলকভাবে মাঝেমধ্যে চালু করা হয়। এ সময় কেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করা হয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ৭৪৯ ইউনিটের কেন্দ্রটি একটানা চালু করা হয়েছে। কেন্দ্রটি থেকে আরও প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। সব মিলিয়ে দুটি ইউনিট থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।

আদানির বিদ্যুৎ ভারতের ঝাড়খণ্ড থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে বগুড়া হয়ে আনার জন্য সঞ্চালন লাইন করা হয়েছে। এই সঞ্চালন লাইনটি পুরোপুরি নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। বর্তমানে ৭৪৯ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ এই সঞ্চালন লাইন দিয়ে আসছে। গত বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর এলাকায় সঞ্চালন লাইন ‘ট্রিপ’ করলে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে যায়। ১৩ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার ফের লাইনটি সচল করা সম্ভব হয়।

আদানির দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে, এটি থেকে আরও বিদ্যুৎ আসবে। এতে স্বস্তি তৈরি হয়েছে পিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগের।

এরমধ্যে সম্প্রতি লোকসান কমাতে তেল ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রে উৎপাদন সক্ষমতার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসে সরকার।  কারন তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন করছ তেল ভেদে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের ৫ থেকে ১০ গুন বেশি। কিন্তু সমালোচনার মুখে চলমান লোডশেডিংয় সামাল দিতে তেলভিত্তিক কেন্দ্রে সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ উৎপাদন করতে চায় সরকার। এতে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে নতুন করে ১০০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত।

আজকের সারাদেশ/০৯জুন/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেসের প্রথম দিনে আয় প্রায় ৫ লাখ

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতরা পাবেন আজীবন চিকিৎসা ভাতা

বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য

কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকে ভাটা, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বোয়ালখালী পৌসভা নানা অনিয়মে গিলে খেয়েছে ‘সিন্ডিকেট’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত