আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রামে লাইটার চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে পুলিশ সদস্য মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর টাইগারপাসের ট্রাফিক বক্সে । পরে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার (১১ জুন) সকাল সোয়া ১০টার দিকে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার ওই কিশোরের নাম নুরুল ইসলাম বাবু (১৩)। সে পুলিশ বক্সের পাশের সিরাজ কলোনী নামে একটি বস্তিতে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শওকত চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের রেকার চালক।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কিশোর বাবু এই দোকান ও আশপাশে থাকে। দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করতো। এছাড়া মানুষ তাকে দিয়ে ফরমায়েশি কাজ করায় বকসিসের বিনিময়ে। সে প্রায় সময় ট্রাফিক বক্সে ঘুমায়। সেখানকার পুলিশ সদস্যরাও তাকে দিয়ে চা আনানোর কাজও করেন। শনিবার (১০ জুন) রাতে সে ট্রাফিক বক্সে ঘুমিয়েছিল। সকালে পাশের মিলনের দোকানে এসে বসে। এসময় পুলিশ সদস্য শওকত লাইটার চুরির অভিযোগে তাকে মারধর করে।
মারধরের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্য শওকত তাতে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মারতে তাকে। এসময় শিশুটি চিকিৎকার করলেও শওকত তাকে মারতে থাকেন। তখন উপস্থিত মানুষজন তাকে থামান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, “ ভিডিও টি নজরে আসার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মারধরের শিকার নুরুল ইসলাম বাবু বলেন, “আমি কোনো চুরি করিনি । তবুও আমাকে মারধর করেছে পুলিশ”
বাবু জানান, তিনি প্রায় সময় ট্রাফিক বক্সেই ঘুমান। শনিবার রাতে বৃষ্টি পড়ায় সেখানে ঘুমিয়েছিলেন।
বাবুর মা সাজু বেগম বলেন, “সে সিগারেটও খায় না। সে চুরি করেনি। তবুও আমি বিচার চাই না। কারণ আমার ছেলে ভালো না। সে আমাদের কারো কথা শুনে না। সে এক বাসায় চার দিন মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেছিল। ওই বাসার ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে বলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সে জানুয়ারিতে ছাড়া পায়।”
উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই মাসে ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ বাবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রায় ছয় মাস কারগারে থাকার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সে মুক্তি পায়।
আজকের সারাদেশ / ১১ জুন ২৩/ একে