আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
বেগম খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না, তাঁকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে কিনা। কারণ তিনি এখন যে অসুস্থ হয়েছেন, এতটা অসুস্থ হওয়ার কথা নয়। তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।’
বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে এই সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। শুধু আটক করে রাখেনি, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁকে কারাগারে অনেক দিন আটক করে রাখা হয়েছিল। বারবার বলেছি, তাঁকে মুক্তি দিন।’
আমেরিকার স্যাংশনে সরকারের হাটু কাঁপছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। স্যাংশন দিয়েছে। আমেরিকা থেকে স্যাংশন। কেন? র্যাবকে কারা ব্যবহার করেছে। র্যাবকে কারা বলেছে, আমাদের ভাইদের তুলে নিয়ে গুম করতে। সেই সরকার। তাঁরা বলে আমরা ভয় পাই না। ভয় পাই না। এমন ভয় পেয়েছে হাঁটু কাপতে শুরু করেছে। কারণ তাঁদের সব কিছুতো বিদেশে। টাকা পাচার করেছে বিদেশে। এইবার যদি তুমি ভোটে আবার কারচুপি করতে যাও, এবার যদি দিনের ভোট রাতে করো। অথবা ওই কুত্তা মার্কা নির্বাচন করো, তাহলে তোমার রেহাই নাই। এইবার রেহাই নাই। আর রেহাই দেওয়া যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সমানে বলে—এ দেশে নাকি গণতন্ত্র আছে। এ দেশে নাকি সুস্থ ভোট হয়। অনেক হয়েছে, আপনি আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। আমরা কোর্টে যেতে পারি না। কোর্টে গেলে, সরাসরি জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মিথ্যা আর গায়েবি মামলা দিয়ে হাজির করা হয়। এরপর হাইকোর্টে যাই, আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে গেলে আবার জেলে পাঠানো হয়। সেটাই শেষ না, জামিন নিয়ে বের হলে আবার মামলা দেওয়া হয়। .
ক্ষমতায় কীভাবে যাবা? ওই পুলিশ, ওই বিডিআর, অস্ত্র যন্ত্র দিয়ে? আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা জনগণকে ক্ষমতায় আনতে চাই। আমরা ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।’
সাংবাদিকেরা লিখতে পারে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সাংবাদিকেরা লিখলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল আইনে মামলা করা হচ্ছে। রোজিনা ইসলামকে আবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। ফটোগ্রাফার শহিদুল ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সাংবাদিক সাগর-রুনিকে বাড়ির মধ্যে নির্মমভাবে হত্যার এখনো বিচার হয়নি।
তিনি বলেন, ‘জনগণের টাকা দিয়ে নিজের উন্নয়ন করছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাঁরা ছাড়া আর কেউ লাভবান হচ্ছে না। আজকে আমাদের সকল অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আদালতে গিয়ে যে আমরা ন্যায়বিচার পাব, সেই ন্যায়বিচার থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। পার্লামেন্টকে শেষ করে দিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে। এই যে মেয়র নির্বাচন হয়েছে। বরিশাল, খুলনায় নির্বাচন হয়েছে। গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের মায়ের কাছে হেরে গেছে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে। যারা জোর করে প্রতারণা করে, জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তাঁরা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। জনগণের ওপর স্টিম রোলার চালাচ্ছে। এই সরকার প্রধান বলেছিলেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কিন্তু কই? যুবক ভাইয়েরা বাজারে যেতে পারে না। লবণের দাম বেড়েছে, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাঁরা বলে, বাংলাদেশ নাকি ভালো আছে। হুম, তাঁরা ভালো আছে। তাঁরা টাকা পয়সা বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনকি তাঁদের সন্তানদেরও বিদেশে পাঠিয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী প্রমূখ।
আজকের সারাদেশ/১৪জুন/এএইচ