আজকের সারাদেশ ডেস্ক:
রানের হিসেবে গত ৯০ বছরে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল৷ শনিবার ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৪৬ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে টাইগার বাহিনী। রানের ব্যবধানের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ জয়। আর দেড় শ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জয়।
এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২২৬ রানের জয় ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে সফরকারীদের বিপক্ষে ওই জয় তুলে নিয়েছিল হাবিবুল বাশারের দল।
অবশ্য ইনিংস ও রান ব্যবধানে বাংলাদেশ দুটি জয় পেয়েছে। ইনিংস ও ১৮৪ রানের জয় এসেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আর ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় এসেছিল দুই বছরের মাথায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৬৭৫ রানের জয়ের রেকর্ড ইংল্যান্ডের। তারা ১৯২৮ সালে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তুলে নিয়েছিল ওই জয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জয়ের রেকর্ড গড়ে কিছুটা প্রতিশোধ নেয় অস্ট্রেলিয়া। ১৯৩৪ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬২ রানের বিজয়ের হাসি হেসেছিল তারা।
শনিবার বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার আগে এই স্থানও ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তারা ১৯১১ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫৩০ রানের ব্যবধানে হারিয়েছিল।
ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পর বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দেশ ৫০০ বা তার বেশি রানের ব্যবধানে জয়ের কীর্তি গড়তে পারেনি।
গত বুধবার সফরকারী আফগানদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে টসে হেরে শুরুতে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি এবং মাহমুদুল হাসান জয়ের অর্ধশতকের সুবাদে লিটন দাসের দল সংগ্রহ করে ৩৮২ রান। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান মাত্র ৩৯ ওভার খেলে ১৪৬ রানেই গুটিয়ে যায়। ওই ইনিংসে চার উইকেট নেন পেসার এবাদত হোসেন।
আফগানদের ফলো-অনে ফেলে ফের ব্যাটিংয়ে নামানোর সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশ দল ২৩৬ রানের লিড নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে। তখন কে জানতো এত বড় জয়ের রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ফের সেঞ্চুরি করেন শান্ত। এই ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশের ‘ব্রাডম্যান’খ্যাত মুমিনুল হকও। পাশাপাশি ওপেনার জাকির হাসান ও অধিনায়ক লিটন দাস হাফ সেঞ্চুরি করেন।বাংলাদেশের সংগ্রহ যখন ৪২৫ রান, তখন ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন অধিনায়ক। লিডসহ আফগানদের সামনে দাঁড়ায় পাহাড়সম টার্গেট, ৬৬২।
এ পাহাড়ের নিচেই যেন ধসে পড়ল হাসমতউল্লাহ শহীদীর দল। নিজেদের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহও টপকাতে পারেনি আফগানরা। বাংলাদেশের পেসারদের তোপে মাত্র ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ।
এই ইনিংসে তাসকিন আহমেদ তুলে নেন চার উইকেট। আর শরিফুল ইসলামের ঝুলিতে যায় তিন উইকেট।
দুই ইনিংসে দুই সেঞ্চুরির মাধ্যমে মোট ২৭০ রান তুলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন নাজমুল হোসেন শান্ত।
আজকের সারাদেশ/১৭জুন/এসএম