আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার জেলার বকশীগঞ্জ থানায় নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা।
তিনি বলেন, মামলায় মাহমুদুল আলম বাবুসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রধান আসামি চেয়ারম্যান বাবুসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১৪ জুন রাতে সন্ত্রাসীদের হামলায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম নিহত হওয়ার পর থেকে বাবু পলাতক ছিলেন। তবে শনিবার সকাল ৭টার দিকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের চর তিস্তাপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার গোলাম রাব্বানী নাদিম অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট এবং একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক মানবজমিনের বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনেরও সহ-সভাপতি ছিলেন।
গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় ১০-১২ জন সন্ত্রাসী নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ১৫ জুন সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ১৬ জুন সকালে তাকে বকশীগঞ্জের নীলাক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
নাদিমের পরিবারের অভিযোগ, বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।
নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, ‘উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুর কেলেঙ্কারির নিউজ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনরা নাদিমের ওপর হামলা চালায়। আমার স্বামী সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের হত্যার সঙ্গে জড়িত মাহমুদুল আলম বাবুসহ তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’
শুক্রবার রাতে বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদার স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়। এ ছাড়া তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সাত দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।
আজকের সারাদেশ/১৭জুন/এএইচ