আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
করোনাকালীন সময়ে প্রায় সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীরাও। কেননা তখন যে প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানেই বন্ধ ছিল নিয়োগ পরীক্ষা। ফলে বেশিরভাগ চাকরিপ্রত্যাশী কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে যোগদান করতে পারেননি। চাতরিপ্রত্যাশীদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে-সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের বয়সে ৩৯ মাস ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।
কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনা মানছে না চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কর্তৃপক্ষ।
চুয়েটে সাম্প্রতিককালের মধ্যে দেয়া সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তাই আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না ৩০ পেরিয়ে যাওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা।
চুয়েট সূত্র জানায়, গত ৬ জুন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫৮ জন নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সহকারী অধ্যাপক-এই তিন ক্যাটাগরিতে আবেদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৮, ৪৫ ও ৪০ বছর রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রভাষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাকি বাকি ৫০ পদে বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ ধরা হয়েছে। এটি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
কেননা ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরিতে বয়সে ৩৯ মাস ছাড়ের নির্দেশনা জারি করেছিল। সেই নির্দেশনায় বলা হয় যেসব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এর অধীন অধিদপ্ততর/পরিদপ্ততর/দপ্তর এবং সংবিধিবদ্ধ/স্বায়ত্তশাসিত/জাতীয়কৃত প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরিতে (বিসিএস ছাড়া) সরাসরি নিয়োগের লক্ষ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি, সেসব দপ্তর/প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বয়স ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তারিখ সর্বোচ্চ বয়সসীমার মধ্যে থাকলে এসব প্রার্থী আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
কিন্তু চুয়েটের নিয়োগে সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। যেসব আগ্রহী নিয়োগপ্রত্যাশীর বয়স এর মধ্যেই ৩০ পেরিয়ে গেছে তাঁরা চুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে বয়সসীমা বাড়ানোর নির্দেশনা মানার অনুরোধ জানালেও কর্ণপাত করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যেই আগামীকাল ২৫ জুন আবেদনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
এজন্য ক্ষুব্ধ নিয়োগপ্রত্যশীরা বয়সসীমা বাড়ানোর নির্দেশনা মেনে নতুন করে আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
একজন নিয়োগপ্রত্যশী আজকের সারাদেশকে প্রশ্ন তোলেন চুয়েট কি সরকারের চেয়েও বড়? তিনি বলেন, দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠান বয়সসীমা বাড়ানোর নির্দেশনাটি মানছে। কিন্তু চুয়েট সেটিকে মানতে রাজি নয়। আমরা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আরেকজন নিয়োগপ্রত্যাশী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত আমার চাকরিতে আবেদনের যোগ্যতা আছে। কিন্তু আমার অধিকার হরণ করছে চুয়েট। কার স্বার্থে তারা এটি করছে আমাদের বোধগম্য নয়।
তবে চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা করোনাকালীন সময়েও নিয়মিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। এ কারণে আগের বয়সসীমা বাড়ানোর নির্দেশনাটি এই নিয়োগে মানা হচ্ছে না।
আজকের সারাদেশ/২৪জুন/এএইচটি/এএইচ