ভোর ৫:৪৮, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণতন্ত্রের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ: মির্জ ফখরুল

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘জনগন ভোট দিলে সেই ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে, সেই প্রতিনিধি পার্লামেন্টে যাবে, পার্লামেন্টে গিয়ে আইন তৈরি করবে যে কীভাবে সরকার গঠন করবে। এজন্যই ত বলা হয় এটা গণতন্ত্র,  এজন্যই বলা হয় পার্লামেন্টে নির্বাচন প্রয়োজন। এজন্য নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পদযাত্রা, মহান  দরজা বলা হয়। সেই দরজাটা এরা (আওয়ামী লীগ) বন্ধ করে দিয়েছে। সেই নির্বাচন আর হয় না।’

রোববার (১৬জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরী এলাকায় শ্রমিক দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ আর নির্বাচনে ভোট দিতে যেতে চায় না৷ কারণ ভোট দিতে হয় না তো যাবে কেন, ভোট হয়? আবার বলা ওদের অধীনেই সুষ্ঠু ভোট হয়। মানুষ হাসবে না কাঁদবে? ভূতের মুখে রাম রাম। ন্যাড়া বার বার বেলগাছ তলায় যায়? আমরা কি বারবার এই নির্বাচনে যাব? মোটেই না।’

আওয়ামী লীগ বকধর্মী বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে বকধার্মিক। নদীর মধ্যে, চরের মধ্যে এক পা দিয়ে একদম চুপ করে বসে থাকে। মনে হয় যে এরমত ধার্মিক, এত ভালো পাখি আর কেউ নাই। যেই একটা মাছ নিচ দিয়ে যায়, গফ করে ধরে ফেলে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই বকধার্মিক। চুপ করে বসে আছে, আবার নতুন ভান করতেছে, ক্ষমতার চেয়ারে টুপ করে বসার জন্য।’

‘ওই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান, সেটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ে করেছিলেন এদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য৷ সেদিন নতুন সংসদ গঠন করে, সেই সংসদে সারারাত ধরে সেশন করে আমরা সবাই সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান করেছিলাম। কেন, যদি নির্বাচনের সময় নির্দলীয় কোনো সরকার থাকে, যে কোনো দল করে না, তখন জনগন নিজের ইচ্ছায় ভোটটা দিতে পারবে। ভোটের পর সাধারণ মানুষ কি ৫ বছর ধরে সরকার চালায়? ওরা একটা দিন হচ্ছে এদেশের মালিক। সেটা হচ্ছে নির্বাচনের দিন।

আওয়ামী লীগ কৌশলে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চায় জানেয়ে তিনি বলেন, ‘এরা আবার আমাদের নির্বাচনে নিতে চায়। বুঝাতে চায় সারা দুনিয়াকে দেখো আমি কত ভালো হয়ে গেছি৷কিছুদিন আগে যে বিদেশিরা আসছিলো, সেই বিদেশিদের দেখায়, দেখো আমি কত ভালো, আমরা বিরোধীদলকে সভা করতে দিই, মিটিং করতে দিই, তাদের বাঁধা দিই না। যে-ই সময় আসে, টপ করে ধরে ফেলবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের অধীনে নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তারা মুখে মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু ভেতরে ভেতরে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। এ দেশের জনগণ এটি আর মানবে না। মূলত আওয়ামী লীগের চরিত্র ভালো না। তারা ভোটের আগে জনগণকে দেওয়া একটি কথাও মনে রাখে না। শুধু মনে রাখে, লুট, ডাকাতি এবং চুরি করে সব পাচার করে দেওয়া। ১৯৭৪ সালে এখনকার মতো যখন তারা লুটপাট শুরু করেছিলেন, মাওলানা ভাসানী তখন বলেছিলেন- আওয়ামী লীগের নামটাই বদলে দিতে হবে।

‘আজ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছেন, মাফিয়া হটাও। মাফিয়া তারা, যারা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকেন আর শুধু লুটপাট করেন। আওয়ামী লীগ পরিকল্পনা করছে, কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসা যায়। তারা প্রশাসনে রদবদল করছে। মন্ত্রীর পিএস এবং এপিএসদের ডিসি (জেলা প্রশাসক) বানাচ্ছে। তারা নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসার হবেন। এছাড়া ইউএনও বানানো হচ্ছে আওয়ামী লীগের পছন্দের লোকদের।’

নির্বাচন কমিশন কথা অনুযায়ী কাজ করেনা দাবি করে তিনি বলেন,  নির্বাচন কমিশন সবসময় সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে। তারা বলে নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো হবে। কিন্তু বাস্তবে তারা এটি করে না। 

আজ এখানে এমন কেউ নেই যে কোনো না কোনো মামলার আসামি। কেউ বোমা মামলার আবার কেউ নাশকতার মামলার। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক দেশ নির্মাণের জন্য। যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে এবং ভোটাধিকার থাকবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে শ্রমিক ভাইরা ন্যায্য মজুরি পান না। জনগণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজারে যেতে পারেন না। অথচ আওয়ামী লীগ বলছিল- ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে। কিন্তু আজ চালের দাম কত? তারা বলেছিল- ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কৃষক ভাইদের বলেছিল- বিনামূল্যে সার দেবে। আজকে সারের দাম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। লন্ডন থেকে অনুসন্ধানী রিপোর্ট হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে- ৫৭২ কোটি টাকার সার বন্দর থেকে গায়েব হয়ে গেছে। যদিও এ টাকা তাদের কাছে কিছুই না। অর্থমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছিলেন- আইএমএফ-এর টাকা কিছুই না। এটা তারা কয়েকজন মিলে শোধ করতে পারেন। তারা পারবেন, কারণ তারা হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছেন।

তিনি বলেন, আপনাদের এখানে একটা টানেল হচ্ছে। কয়েকদিন পর সেটা উদ্বোধন করা হবে। আমরাও খুব খুশি। কারণ পৃথিবীর খুব কম দেশে টানেল হয়েছে। টানেল হওয়াতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমাদের আপত্তি অন্য জায়গায়। আজকে জনগণ ১০ টাকায় চাল খেতে পারছেন না। অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতাল নির্মাণ হয় না। সরকার আমাদের দেখান গত ১৫ বছরে জনগণের জন্য কয়টা হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে। একটাও দেখাতে পারবেন না। সাধারণ মানুষের লেখাপড়ার জন্য স্কুল-কলেজ তৈরি করেননি। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। এ জন্যই আমরা রাস্তা নেমেছি। 

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মীর নাসির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, বান্দরবান বিএনপির নেতা ম্যামাচিং প্রমূখ।

আজকের সারাদেশ/১৬জুলাই/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি