সকাল ১০:২৪, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই জাপা নেতা সালামের মৃত্যু গণপিটুনিতে

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস থেকে সম্পর্কে, সেই সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। প্রেম থেকে হয় অন্তরঙ্গ সম্পর্ক, সেই সম্পর্কের জেরেই প্রেমিকার বাড়িতে গণপিটুনিতে খুন হন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক সালাম বাহাদুর।

সালাম হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার দুজনকে মানিকগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ, তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি বাহিনীটি।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে, যাদের সাত দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে।

গত ১৫ জুলাই রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া যায়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম সালাম বাহাদুর ওরফে আব্দুস সালাম মিয়া। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার। এ ছাড়া তিনি জাতীয় পার্টির (জেপি) কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক।

সালামের মৃত্যুর ঘটনায় পরের দিন শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হয়। এ মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যায় জড়িতদের তথ্য ও কারণ।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বুধবার জানান, মরদেহটি কে বা কারা জরুরি বিভাগের সামনে এনে রেখে গেছে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়, তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় সব সিসিটিভি ক্যামেরা অকার্যকর থাকায় প্রাপ্ত তথ্যগুলোর ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে পৌঁছান, তবে তারা হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে তেমন কিছু জানাতে পারেননি। নিহতের ভাই শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দিলে হত্যা মামলা হয়।

থানা পুলিশের বরাত দিয়ে ডিসি জানান, ঘটনাস্থল সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে না পারায় ঘটনার রহস্য উদঘাটনে বেগ পেতে হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত বেশ কিছু তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।

আজিমুল হক বলেন, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকা ও মানিকগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা সম্পর্কে মা ও মেয়ে।

গ্রেপ্তার দুজনের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মেয়েটির সঙ্গে সালামের পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে পরিচয়। সরকারি চাকরি পাইয়ে দিতে সহায়তার প্রলোভনে সালাম ও অভিযুক্ত মেয়েটির মধ্যে প্রথমে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়, তবে কিছুদিনের মধ্যে মেয়েটি বুঝতে পারে সালাম তাকে চাকরির বিষয়ে সহায়তা করতে পারবে না।

পারিবারিকভাবে এ বিষয়গুলো জানাজানি হলে এ সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন ওই নারী, কিন্তু সালাম তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও গ্রেপ্তার হওয়া মেয়ের পরিচিতজনদের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন থেকে তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মেয়েটির পরিবার এ নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়ে এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে থাকে।

উপকমিশনার আজিমুল হকের ভাষ্য, ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে সালাম মেয়েটির বাসায় পৌঁছান। এ সময় মেয়ের মা ও সালামের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটি শুনে আশেপাশ থেকে লোকজন ছুটে আসেন। তারা মা ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সালামকে বেধড়ক মারপিট শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, সালামের আসার বিষয়টি মা ও মেয়ের মাধ্যমে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী লোক আগে থেকেই জানতেন। তারা ঘটনাস্থলে এসে সালামকে আবারও মারপিট করে গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখেন। মূলত আহত সালামকে আটকে রেখে আর্থিক সুবিধা আদায় ও বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্য থেকে মা ও মেয়েসহ তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিলেন।

পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, নানা শারীরিক সমস্যা ও মারপিটের কারণে সৃষ্ট জখমে দীর্ঘক্ষণ রক্তক্ষরণ হওয়ার একপর্যায়ে সালামের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন ও মেয়েটির মা আহত সালামকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বের হন, কিন্তু সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সালামের মৃত্যু হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে সালামের প্রেমিকার মায়ের সঙ্গে আসা ব্যক্তিরা মাঝপথেই নেমে যান। পরে প্রেমিকার মা সালামকে জরুরি বিভাগের প্রবেশপথে রেখে চলে যান।

আজকের সারাদেশ/১৯জুলাই/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি