আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
সোমবার রাতে নিজের এলাকায় বন্যার অবস্থা খারাপ জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জারিফ। ওই স্ট্যাটাসে দ্রুত সময়ে নিজ এলাকার স্কুল কলেজের ভবনগুলো খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি৷ তবে ওই স্ট্যাটাসের সাড়ে তিন ঘন্টা পর রাত দুটার দিকে পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার পথে পানিতে তলিয়ে যান তিনি৷ এর ১৩ ঘন্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
মর্মান্তিক এই ঘটানাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায়। মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ২১ বছর বয়সী জুনায়েদুল ইসলাম জারিফ চট্টগ্রামের বিসিজি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। লোহাগড়ার আমিরাবাদ এলাকায় বাবা মায়ের সাথে বসবাস করতেন। সোমবার রাত দুটার দিকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে জনকল্যাণ নামক এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যান তিনি৷
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘একজনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়েছি, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।’
সোমবার রাত ১০টা ৩১ মিনিটে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে জারিফ লেখেন, ‘অতিদ্রুত সময়ের ভিতর লোহাগাড়ার স্কুল/কলেজ ভবনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেন… বন্যার অবস্থা খুব খারাপ।’
এর দুদিন আগেও ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর শেয়ার করে অতিবৃষ্টিতে যে কোনো প্রয়োজনে নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
এদিকে সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন একই এলাকায় চট্টলা পাড়ার কৃষক ৬০ বছর বয়সী আসহাব মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে স্থানীয় পদুয়া তেওয়ারিহাট বাজার থেকে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে যান। ঘটনাস্থলের অদূরে ছেলেকে পাওয়া গেলেও নিখোঁজ থাকেন আসহাব মিয়া।
আসহাব মিয়া নিখোঁজের বিষয়ে পরিদর্শক সাইফুল বলেন, ‘তিনি পানিতে তলিয়ে গতকাল থেকে নিখোঁজ। এখনো উদ্ধার করা যায়নি তাকে।’
পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকায় কয়েক লক্ষ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে৷ এরমধ্যে সাতকানিয়া উপজেলা প্রায় পুরেটাই তলিয়ে গেছে পানিতে। বন্যার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এএইচ/এসএম