আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
বউ-শাশুড়ি দ্বন্দ্বের কথা সবাই জানেন। এমন দ্বন্দ্বে অনেক সংসার ভেঙে যায়। আবার বউকে নিয়ে ছেলে আলাদা সংসারে চলে যায়। অর্থাৎ এই দ্বন্দ্বে সংসার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের মুম্বইতে এর ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুত্রবধূকে ভালবেসে নিজের একটি কিডনি দান করেছেন ৭০ বছর বয়সী এক শাশুড়ি।
ঘটনাটি ঘটেছে এ মাসেই। মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালে ১লা আগস্ট কিডনি প্রতিস্থাপনের এই অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। পুত্রবধূ আমিশার (৪৩) দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। গত বছর কিডনির জটিল সমস্যা পরীক্ষা করাতে গিয়ে ধরা পড়ে তার দুটি কিডনিই শেষ।
এ অবস্থায় তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা না হলে বাঁচানো যাবে না- এ কথা পরিবারকে সাফ জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাকে কেউই কিডনি দান করতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ কথা শুনে আমিশার শাশুড়ি প্রভা কান্তিলাল মোতা এগিয়ে এলেন। তিনি পুত্রবধূর জীবন বাঁচাতে একটি কিডনি দান করলেন। সেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে আমিশার শরীরে। এতে আমিশা আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি এখনও হাসপাতালে।
অন্যদিকে প্রভা কান্তিলাল মোতা বাড়ি ফিরেছেন। পরিবারের সবাই তাকে বিরল সংবর্ধনা দিয়েছে। তাকে দেখতে আশপাশের মানুষজন ছুটে আসছেন। এই যুগে একজন শাশুড়ি তার কিডনি দান করেন পুত্রবধূকে!
প্রভা কান্তিলাল মোতা বলেছেন, বউমাকে কিডনি দিতে ভয় পাচ্ছিল সবাই। তাই আমি আমার একটি কিডনি তাকে উপহার হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমি বলেছি- কিডনি দেয়ার জন্য একেবারে ফিট আছি। আমিই দেবো কিডনি। আমি তো আমার পুত্রবধূকে পুত্রবধু হিসেবে দেখি না। সে আমার মেয়ে। তাই মেয়ের জীবন বাঁচাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তাদের পারিবারিক ডাক্তার চন্দ্রকান্ত লালন। তিনি বলেছেন, চিকিৎসক হিসেবে আমার ক্যারিয়ার ৪৪ বছরের। এ সময়ের মধ্যে এবারের এই ঘটনার মতো কিডনি দান এর আগে কখনো দেখিনি। ভারতে বেশির ভাগ কিডনি বা অঙ্গদাতা হলেন নারী। তারা এসব দান করেন স্বামী, পিতামাতা বা সন্তানদের জন্য। কিন্তু পুত্রবধূর জন্য শাশুড়ির কিডনি দান! আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগে।
আজকের সারাদেশ/ ৯ আগস্ট