রাত ৮:১৭, মঙ্গলবার, ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশিরা এখানে অশান্তি চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

বিদেশিরা বাংলাদেশের মঙ্গল চায় না, বরং এখানে অশান্তি চাই বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘বিদেশি লোক আপনার মঙ্গল চায় না। তারা আপনার এখানে অশান্তি চায়। অশান্তি হলে দেশ যদি দুর্বল হয়, তাদের অনেক সুবিধা হয়। তাই তারা দেশকে দুর্বল করতে চায়। তাদের ওই ভেল্কিতে অবগাহন করবেন না। দেশের উন্নয়ন দেশের লোক, সরকার করবে।

বুধবার (৯ আগস্ট) ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি’ শীষর্ক ‘বিএসটি নাগরিক সংলাপ-১৯’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট (বিএসটি)।

সংলাপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ৬ মাসে বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে নির্বাচন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে আমাদের (বাংলাদেশে) নির্বাচন হওয়ার আগে আরও ২২টি দেশে নির্বাচন হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএনএ তাদের প্রতিদিনের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করে। আর বাকি দেশগুলোর নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ নেই। এর এটি অর্থ হচ্ছে, আমাদের অবস্থান অনেক উন্নত হয়ছে, সবার আকর্ষণ বেড়েছে।

সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এই যে প্রায় শখানেক দেশে নির্বাচন হলো, সেসব দেশের নির্বাচনের মূল আলোচ্য বিষয় হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি, মুদ্রাস্ফীতি। আপনারা (সাংবাদিক) আগামীতে বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যু হিসেবে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। কারণ এগুলো হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আপনারা যদি বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ আশা করেন, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো তুলে ধরতে হবে। আর বাকি যেসব অবান্তর কথাগুলো আসে, সেগুলো আপনার মুখ্যভাবে না দেখলেই ভালো। কারণ দুনিয়ার এতগুলো দেশে নির্বাচন হয়, কোথাও এসব কথা আসে না।

ড. মোমেন বলেন, আগামী ৫-৬ মাস পর দেশে নির্বাচন হবে। এখন আলোচনায় আসা উচিত, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত আমাদের অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থান কী ছিল, আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কতটুকু ছিল, আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে। আর বর্তমানে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে কী হয়েছে।

আজকের সারাদেশ/০৯আগস্ট/এএইটচ

রাজনীতি দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি দেশের মঙ্গল চান, অর্থনৈতিক-সামজিক মঙ্গল, তাহলে কাকে আপনাদের ভোট দেওয়া উচিত। এগুলো বিবেচ্য বিষয়। তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনাদের দায়ী করবে না।

এবারের নির্বাচন অত্যন্ত স্বচ্ছ-সুন্দর হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাঙালি অত্যন্ত পরিপক্ক জাতি। তারা যখন ভোট দেয়, তখন ঠিকই আসল জায়গায় ভোট দেয়। তারা চায় সহজে জীবনটা যাতে চালাতে পারে। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা নিশ্চয়তা চায়।

তিনি আরও বলেন, যেসব দেশে রাজনৈতিক স্থিরতা আছে, আঞ্চলিক স্থিরতা আছে, শান্তি আছে, সেসব দেশে উন্নয়ন সবচেয়ে বেশি। ছোট দেশ সিঙ্গাপুর আজকে প্রায় ৬৫ বছর ধরে স্থির। বাপ এবং ছেলে দেশটি শাসন করছে। অথচ সিঙ্গাপুর একটি বিরানভূমি ছিল যে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দিয়েছে। সেই দরিদ্র জায়গা রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিরতার কারণে এখন এশিয়ার এক নম্বর দেশ। ইউএইর বয়স আমাদের দেশের মতো। সেটিও একটি বিরানভূমি ছিল। কিন্তু বাপ ও ছেলের ভিশন ও স্থিরতার কারণে তারা এখন পৃথিবীর হাব, আকর্ষণীয় জায়গা। স্থিরতার কারণে আরও অনেক দেশের উন্নয়ন হয়েছে। আর যেসব দেশে রাজনৈতিক স্থিরতা, শান্তি, শৃঙ্খলা নেই, সেসব দেশের ভরাডুবি হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশে মারামারি-কাটাকাটি চাই না। আমরা দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। আমরা যদি দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। অন্যথায় কী হবে জানি না।

আগামী নির্বাচনে একটি বড় পরীক্ষা হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেই নির্বাচনে যদি আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে শেখ হাসিনার সরকারকে জয়যুক্ত করতে পারি, তাহলে ওনার ট্রেক রেকর্ড অনুযায়ী যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই গতিধারা চালু থাকবে। অন্যথায়, ২০০১-২০০৬ এর অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। আগামী নির্বাচন হবে, ভবিষ্যতে আমরা ভালো থাকব নাকি ধ্বংস হব তার নির্বাচন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের একজন বাংলাদেশি নাগরিককে ইয়েমেনে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আজকে তিনি ঢাকায় আসবেন। এটি সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং সুসম্পর্কের কারণে। আমরা প্রত্যেক দেশের সঙ্গে ব্যালেন্স পলিসি নেওয়ায় এবং সুসম্পর্কের কারণে আমরা আমাদের নাগরিককে ফেরতে নিয়ে আসতে পেরেছি।

বিএসটি-এর সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান লিটুর সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। বিএসটি-এর সাধারণ সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীরের স্বাগত বক্তব্যে সংলাপে আলোচক হিসেবে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের সম্পাদক ড. খান আসাদুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ।

আজকের সারাদেশ/০৯আগস্ট/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকে ভাটা, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বোয়ালখালী পৌসভা নানা অনিয়মে গিলে খেয়েছে ‘সিন্ডিকেট’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাহাড়ে সেনাশাসন নয়, অপতৎপরতা প্রতিহত করতেই সেনাবাহিনী

চবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা