আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
এবার এক নারী ও তার ভাইয়ের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিমুদ্দিন, এসআই জাকিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম অলি উল্লাহর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শামিমা ওয়াহেদ। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারি শফিউল।
ওসি-এসআই ছাড়া মামলার অন্য আসামি হলেন ভুক্তভোগী নারীর সৎপুত্র আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী শামিমা পাঁচলাইশ থানার জাঙ্গল পাড়ায় তার মায়ের কেনা সম্পত্তি রিজিয়া ম্যানসনের একটি ফ্ল্যাটে ভাইসহ বসবাস করেন। অভিযুক্ত ফয়সাল ২০১২ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ভুক্তভোগী ও তার দুই শিশু সন্তানকে পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে মিথ্যা মামলায় হয়রানিসহ নানা চেষ্টা করতে থাকেন। এর ধারাবাহিকতায় ২৭ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে ভুক্তভোগী, তার ভাই সাজ্জাদুল ইসলাম ও মামলার ২ নম্বর সাক্ষী রাশেদুলকে পাঁচলাইশ থানায় ওসির কক্ষে ডেকে নিয়ে বাজে ভাষায় গালাগাল করে এক সপ্তাহের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। এরমধ্যে বাসা না ছাড়লে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে ঢুকানোর হুমকী দেন তিনি। এসময় শামিমা বারবার ‘রিজিয়া ম্যানশন’ নিয়ে দেওয়ানি আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানালেও তার তোয়াক্কা করেনি অভিযুক্তরা।
এরপর ১২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে অভিযুক্ত ফয়সাল ও পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক জাকির লাঠিসোটা ও অস্ত্রধারী অজ্ঞাত কয়েকজনকে নিয়ে রিজিয়া ম্যানসনে যান। সেখানে ভুক্তভোগী শামিমার ভাই সাজ্জাদকে তৎক্ষনাৎ বাসা থেকে বের করে দেওয়া চেষ্টা করেন তারা। সাজ্জাদ বাসা থেকে বের না হওয়ায় তাকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে আসামিরা। এসময় ভুক্তভোগী ও তার ভাই সাজ্জাদ অভিযুক্তদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইলে ওসির নির্দেশে ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানান। সময়মত ৫০ লাখ টাকা না দিলে সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়ে রিজিয়া ম্যানসন থেকে ভুক্তভোগীদের বের ও শামিমার দুই শিশু সন্তানকে মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়। এসময় এসআই জাকির বলেন যে, ওসিসহ মিলে তাকে (শামিমা) মেরে ফেললেও কেউ বুঝতে পারবে না।
এরপর ১৬ আগস্ট ফয়সাল, এসআই জাকির ৭ থেকে ৮ জন কনস্টেবল ও ৫ থেকে ৬ জন সন্ত্রাসীসহ ফের রিজিয়া ম্যানসনে গিয়ে সাজ্জাদকে মারধর করে। এরপর ওইদিন বিকেল পাঁচটার দিকে একটি দৈত্যাকার কুকুর নিয়ে ফয়সাল রিজিয়া ম্যানসনের বাসিন্দাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন। অভিযুক্তদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো ভবনের বাসিন্দারা জীবনের শঙ্কায় রয়েছে।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমরা দুপুরে আদালতে মামলাটি দায়ের আবেদন করেছি। আদালত বিকেলে মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিমুদ্দিন ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আজকের সারাদেশ/১৭আগস্ট/এএইচ