আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
দেশে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসনের সম্পূর্ণ ভুল ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ নজরুল। তার দাবি স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন স্বাধীনতার পর থেকেই শুরু হয়েছে।
শনিবার (১৯আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতা চিন্তক-লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো, দেশের পক্ষে দাঁড়ানো, জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা শক্তিশালী ভূমিকা নিতে পারছে না। কিন্তু এর বিপরীত বয়ানের ক্ষেত্রে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা সেইমলেসলি ঐক্যবদ্ধ। একটা জঘন্য মিথ্যা প্রতিষ্ঠার জন্য তারা সবাই নির্লজ্জভাবে প্রচণ্ড ঐক্যবদ্ধ। যেমন বলা হয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৭৫ পরবর্তীতে নাকি স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন শুরু হয়েছে। এই বয়ান সম্পূর্ণ ভুল, সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই শুরু হয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ বাহিনীর প্রধান, গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়েছে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর তাদের নিজে পুনর্বাসন করেছেন। এই সত্য বয়ান কিন্তু আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যা বয়ানের বিপরীতে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। এখানেই আমাদের ব্যর্থতা। আমরা সত্য বলার ক্ষেত্রেও তাদের মিথ্যা বলার মত অতটা শক্তিশালী না।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘দেশের বড় বড় পত্রিকায় তাদের একসেস আছে। ফলে যাকে কেউ চেনে না, জানে না এমন আওয়ামী পন্থীদেরও তারা বুদ্ধিজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছে। আবার ড. জাফর উল্লাহ যখন কথা বলতেন, মিডিয়া তাকে বলত বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী। কিন্তু ড. আনিসুজ্জামান যখন কথা বলতেন, তখন তাকে কিন্তু আওয়ামী পন্থী বুদ্ধিজীবী বলত না। তাকে বলা হত শুধু বুদ্ধিজীবী। এটার বিরুদ্ধে আমরা কি কিছু করতে পেরেছি। আরেকটা উদাহরণ দেই বিএনপি জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস বলা হয়, এটা তারা প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। কিন্তু তারা কি অগ্নি সন্ত্রাস করেনি? কিন্তু এর বিপরীতে আমরা কি পাল্টা কোনো শক্তিশালী বয়ান দিতে পেরেছি? পারিনি। সুতরাং পাল্টা বয়ানে আমরা শক্তিশালী না। এই জায়গাটাতে আমাদের উন্নতি করতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক গোলাম শফিক, সাহিত্যিক রাখাল রাহ্সহ অন্যরা।
আজকের সারাদেশ/১৯আগস্ট/এএইচ