কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’। বিভিন্ন সময়ে পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতা তৈরি, পাখির জন্য আবাসন তৈরি, বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ সম্পর্কিত নানাবিধ কাজ করে থাকেন তারা। তবে প্রথমবারের মতো এক ব্যতিক্রমী কার্যক্রম সম্পাদন করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা। প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছ বিতরণ। নিজের জমিয়ে রাখা প্লাস্টিকের বোতল সংগঠনের কাছে জমা দিলেই মিলছে গাছ। এমনই এক কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাডমিন্টন কোর্টে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান, সংগঠনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল সিফাত ও সংগঠন অন্যান্য সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজনকারীদের ধন্যবাদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আবদুল মঈন বলেন, ‘প্লাস্টিক বোতল শুধু পরিবেশের জন্য নয়, আমাদের প্ল্যানেটের জন্যও বিপজ্জনক। আমাদের ভালোভাবে বাঁচতে হলে সাসটেইনেবল প্লানেট গড়ে তোলা অতীব জরুরি। এরই অংশ হিসেবে প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছ একটি ফলপ্রসূ উদ্যোগ। তোমরা যে গাছগুলো নিচ্ছো সেগুলোর নিয়মিত যত্ন নিবে।’
অভয়ারণ্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আবদুল্লাহ আল সিফাত বলেন, ‘পরিবেশের জন্য প্লাস্টিক কতটা ক্ষতিকর সেটা আমরা সবাই জানি। আমরা চাই পরিবেশের শত্রু প্লাস্টিক না থাকুক। যদিও এটা করা সম্ভব নয়। তবে আমরা চাচ্ছি প্লাস্টিকের প্রতি মানুষের ঘৃণা জন্মাক। পাশাপাশি পরিবেশের বন্ধু যে গাছ, সেটার প্রতি মানুষের ভালোবাসা তৈরি হোক। একটা গাছ দিলে যে সেটা পরিবেশের প্রতি বড় ইফেক্ট ফেলবে তা নই। তবে যদি একটা গাছ দিয়ে গাছের প্রতি মানুষের ভালোবাসা তৈরি করতে পারি তাহলে তার দ্বারা হাজার হাজার গাছ রোপণ করা সম্ভব। আমরা অভয়ারণ্য চাই, এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্লাস্টিকের প্রতি মানুষের ঘৃণা তৈরি হোক এবং মানুষ এটা ব্যবহার না করুক। এবং পাশাপাশি মানুষ প্রচুর পরিমাণে গাছ রোপণ করুক এবং পরিবেশের বন্ধু গাছের যত্ন নিক।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রায় ১৫ প্রজাতির ফুল ও ফলজাতীয় গাছ প্লাস্টিকের বিনিময়ে বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে ছিল কৃষ্ণচূড়া, বকুল, কাঠবাদাম, পেয়ারা, কড়ি, লিচু, জাম, বেলি, রঙ্গন, রাধাচূড়া, সোনালু, টগর ও কাঞ্চন।
এদিকে এমন উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, এই আয়োজনটি ছিল সত্যিই অসাধারণ। বৃক্ষ হলো আল্লাহ তায়ালার দেওয়া অন্যতম এক নেয়ামত। গত কয়েক শতক ধরে মানুষ সভ্যতা গড়ে তুলতে বৃক্ষ নিধন করে আসছে যা সত্যিই হৃদয়বিদারক। আজ পুরো বিশ্ব তাপদাহের সাক্ষী এবং এর পরিমাণ আরো যে বাড়বে তা সহজেই অনুমেয়। তাই, এই কঠিন পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বৃক্ষরোপণের কোনোই বিকল্প নেই। যার একটি নতুন সূচনা বলা চলে আজকের এই আয়োজনটি। এবং এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ এসব কর্মসূচি আমাদের পরিবেশের প্রতি দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
আজকের সারাদেশ/২২আগস্ট/এসএম