আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
সম্প্রতি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির প্রবেশ করায় বোর্ডে আনসার সদস্যদের বসার স্থানের টাইলস ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই ঘটনায় গত ৮ জুন সিমেক্স পেপার লিমিটেড নামের ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ হাজার টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ নেন বোর্ডের সচিব অধ্যাপক রেজাউল করিম। কিন্তু নগদ আর্থিক লেনদেনের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো নিয়ম না থাকায় বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এতে ১৯ জুন সচিবকে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় তিন মাসের মধ্যে গেল বৃহস্পতিবার ফের শোকজ করা হয় তাকে। এবার ৭ সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিধি মোতাবেক কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়েছে বোর্ড। তবে শনিবার তাকে শোকজের বিষয়টি জানাজানি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের এক কর্মচারী জানান, মাস তিনেক আগে ওএমআর শিটসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে বোর্ডে প্রবেশ করা একটি ট্রাকের কারণে বোর্ডের নিচের তলায় আনসার সদস্যদের বসার স্থানের টাইলস ভেঙে যায়। পরে ওই স্থানটি বোর্ড নিজস্ব অর্থায়নে মেরামত করে। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা না করে সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে ৬ দিন পর তা জমা করেন। কিন্তু সাধারণত বোর্ডের সব কাজ অফিসিয়ালি হয়, ক্ষতিপূরণ নিলেও তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নেওয়ার কথা।
তিনি আরো জানান, প্রথম দফায় শোকজের জবাবে নিজের অবস্থান পরিষ্বকার করার পরিবর্তে বোর্ডের চেয়ারম্যানকেই ঘটনার জন্য দায়ী করেন সচিব। এতে বৃহস্পতিবার তাকে ফের শোকজ করা হয়।
দ্বিতীয় দফায় করা শোকজে বলা হয়, হয়—শিক্ষাবোর্ডে সচিবের মতো দায়িত্বশীল পদে কর্মরত থেকে আপনি জানেন, বিধিবহির্ভূত নগদ অর্থ গ্রহণ করা যায় না। আগের সুনির্দিষ্ট খাত ব্যতীত তা পরবর্তী কর্মদিবসে জমাদানের পরিবর্তে ০৬ (ছয়) দিন বিলম্বে জমাদানকারী হিসাবে নিজ নাম ব্যবহার করে জমা দেওয়া চরম আর্থিক অনিয়ম ও কর্তব্যকর্মে অবহেলা প্রদর্শনের শামিল। আপনার প্রদত্ত ব্যাংকে নিজ নামে জমাদানের রশিদ ও অন্যান্য কাগজপত্র আপনার বিধিবহির্ভূত অনৈতিক নগদ অর্থ গ্রহণকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে। আপনার এহেন কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী (আপিল ও শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮ মোতাবেক অসদাচরণের শামিল। এছাড়াও, নগদ অর্থ গ্রহণের বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়াতে বোর্ডের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সেহেতু, এমতাবস্থায় এ বিষয়ে আপনার বিরুদ্ধে কেন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্রপ্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক রেজাউল করিম ও চেয়ারম্যান মুস্তফা কামরুল আখতারের সেঙ্গ একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আজকের সারাদেশ/২৬আগস্ট/এএইচ