আজকের রাদেশ প্রতিবেদন:
ওবায়দুল কাদের এমনিতেই ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন, এমনিতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে ধারণা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। তিনি বলেছেন ওবায়দুল কাদের ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন। এমনিতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন- বিএনপির আন্দোলনের নাকি বারোটা বেজেছে। এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আসলে আমাদের কর্মসূচিতে লোকসমাগম দেখে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ও আবোল-তাবোল বলছেন। ওবায়দুল কাদের ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন। কারণ তাদেরতো জনভিত্তি নেই। তারা তাদের নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে এসব বলছেন। আমি বলবো, ওবায়দুল কাদের এখনও সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। এটা চাওয়া কোনো ষড়যন্ত্র নয়, এটা জনগণের দাবি।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক ও অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) সাবেক সভাপতি আমার দেশ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান ও বরেণ্য সম্পাদক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজার প্রতিবাদে ‘মাহমুদুর রহমানের সংগ্রাম ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে অ্যাব।
সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান চুন্নুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মাহমুদুর রহমানের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন আমারদেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আমিন রোকনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, কুষ্টিয়ায় আদালতে মাহমুদুর রহমানের ওপর ভয়ংকর আক্রমণ করা হয়েছে। এটা কী একটা রাষ্ট্র? আজকে যে অভিযোগে আমেরিকার আদালত মামলা বাতিল করে দেয়, সেখানে বাংলাদেশে একটা নিউজর কারণে বিচার করা হয়। এটাতো শেখ হাসিনার আদালত, আওয়ামী লীগের আদালত। সেই আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে মাহমুদুর রহমানকে ও শফিক রেহমানকে। সাজা দেওয়া হয়েছে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। কারণ শেখ হাসিনা ন্যায়বিচারের আদালতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সেখানে এ ধরনের বিচারই হবে। সেজন্যই তো বিচারকরা বলছেন- শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। আজকে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান দেশে থাকলে শেখ হাসিনা তাদের মেরে ফেলতেন!
সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের সাজা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ হলো গুণ্ডাদের দল। রাষ্ট্রকে দিয়ে শেখ হাসিনা এগুলো করছেন। আজকে শেখ হাসিনার ছেলেকে নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারে না। আর অন্যদিকে স্বাধীন সাংবাদিক ও লেখকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অতীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনটা হয়েছিল। সেই অত্যাচার পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন শেখ হাসিনা। আসলে কর্তৃত্ববাদী দেশে এসবই হয়। শেখ হাসিনার আদালতে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সেই নির্যাতনের ধারা আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনেও শেখ হাসিনা জারি রেখেছে। ২০ নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। অনেককে পঙ্গু করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ধারা ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই শুরু হয়েছে। এজন্য আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ‘ওয়ান ইলেভেন তাদের আন্দোলনের ফসল‘। সেসময় সেনাপ্রধান মঈন উদ্দিন আহমেদ বললেন- ‘হাওয়া ভবনের কারণে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের নামে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে‘! পরে সেটার দাঁতভাঙ্গা জবাব কলামের মাধ্যমে দিয়েছিলেন মাহমুদুর রহমান। তিনি লিখলেন- ‘গোটা ৫ বছরে বাজেট হলো ১৩ হাজার কোটি টাকা‘। সেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে কীভাবে? আসলে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হলো ওয়ান ইলেভেন।
তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন দেশপ্রেমিক। তিনি কোনো দলের নেতা নন। তার ওপর ভয়ংকর অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন করা হয়েছে। বহুদিন কারাবরণ করেছেন। তারপরও সম্প্রতি সাত বছর সাজা দিয়েছে। তিনি একজন বিচক্ষণ ও সাহসী মানুষ। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিতে তিনি আপস করতেন না। তিনি ছিলেন আপসহীন দেশপ্রেমিক ব্যক্তি। স্বাধীনচেতা মাহমুদুর রহমান বলতেন এবং লিখতেন। তার সত্য উচ্চারণ আকাশে বাতাসে ভাসে। সেজন্যই তিনি অবৈধ সরকারের টার্গেটের শিকার হয়েছেন। তার শরীরের বহুবার নির্যাতন করেছে। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। চাইলেই চাকরি করে বিলাসী জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি দেশের জন্য যে ত্যাগ করেছেন সেটা অতুলনীয়।
আজকের সারাদেশ/২৬আগস্ট/এএইচ