আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
স্কুল চালাকালে মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করার ফলে বিষক্রিয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সাত শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালেও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অসুস্থ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার (৩১শে আগস্ট) দুপুরে এমন এক ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে উপজেলার ফতেয়াবাদ মহাকালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অসুস্থ হওয়ার পরও তাদের ছুটি দেওয়া হয়নি। ছাত্রীরা হৈচৈ শুরু করলে পরে তাদের অভিভাবকরা উদ্ধার করে চৌধুরীহাট মোজাম্মেল মেডিকেল হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা হলো- ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী- অথই নন্দী, ফাল্গুনী শীল, সাদিয়া আক্তার, ফাহিমা আক্তার, নিঝুম, ইশা ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাথী চক্রবর্তী। তাদের মধ্যে সাথী চক্রবর্তী গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতাল থেকে ফিরে আসা ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, মশার ওষুধ দেওয়ার সময় আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। আমরা সবাই কাশতে কাশতে অস্থির হয়ে পড়ছি। স্যারেরা আমাদেরকে ছুটি দিচ্ছিল না। বলছে, আমরা নাকি অভিনয় করতেছি। আমার বান্ধবী ফাল্গুনী শীল মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার পর আমি তার বাবাকে জানিয়েছি। আঙ্কেল এসে উদ্ধার করে আমাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ফাল্গুনী শীলের বাবা রবিন শীল জানান, স্কুল থেকে হঠাৎ ফোন আসে, আমার মেয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম, মশার ওষুধ স্প্রে করাতে তাদের নাক মুখ বন্ধ হয়ে আসছিল। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাই। আমার মেয়ে এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। ঘটনাটি স্কুল শিক্ষকেরা আমাকে অবগত করেননি।
ফতেয়াবাদ মহাকালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল কান্তি দে জানান, মশার ওষুধ স্প্রে করার কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। চিকনদন্ডি ইউনিয়ন পরিষদের একজন গ্রাম পুলিশ এসে ওষুধ ছিটায়। তার কিছুক্ষণ পর স্কুলের ৬ষ্ঠ ও ১০ম শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ছাত্রীরা হৈচৈ শুরু করে। এরই মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হার্টের সমস্যা ছিল। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাথী চক্রবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, মশার ওষুধ স্প্রে ছিটানোর সময় আরও সচেতন হওয়া উচিৎ। ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছি। প্রধান শিক্ষক ও ওই স্কুলের সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। অসুস্থ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
আজকের সারাদেশ/৩১আগস্ট/এসএম