আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির ফলে ডুবে গেছে রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের আইকন ঝুলন্ত সেতু। ফলে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। আর নিরাপত্তা বিবেচনায় সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, (৩ সেপ্টেম্বর) রোববার সেতুর মূল ফটকে ঝুলছে নোটিশ। আর সেতুর পাশে উড়ছে লাল পতাকা। সেতুর পাটাতনের ওপর পানি উঠেছ প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি, যা বেড়েই চলছে। পানির চাপে অনেক স্থানেই খুলে গেছে পাটাতন কাঠ। ফলে সেতুতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না পর্যটকদের।
এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেক পর্যটক এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডুবন্ত সেতুতে। ঝুলন্ত সেতুর এমন ডুবন্ত অবস্থা দেখে হতাশার কথা জানালেন পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে রাঙামাটি বেড়াতে এলাম। আশা ছিল সেতুতে ছবি তুলবো। কিন্তু এসে দেখি ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে আছে। এতো পরিশ্রম করে আসাটা ব্যর্থ হয়ে গেল।’
নোয়াখালী থেকে আসা শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে রাঙামাটিতে এলাম। এসে প্রথমেই ঝুলন্ত সেতুতে যাই, দেখি সেতু পানিতে তুলিয়ে আছে। এখন হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। আগে জানলে আসতাম না।
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল নামার কারণে কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বেড়েছে। এতে সেতুটি ডুবতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ছয় ইঞ্চি পানিতে ডুবে গেছে সেতু, এখনো পানি বাড়ছে। নিরাপত্তার জন্য সেতু দিয়ে পারাপার বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হবে। ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়া সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এই সেতুটি যদি আরও ৫ ফুট উঁচু করা হয় তাহলে এ সমস্যা আর থাকবে না।’
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক আলক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ডুবে গেছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পানি কমে গেলে আবারও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’
উল্লেখ্য, ১০৫ এমএসএল পানি হলেই ডুবে যায় ঝুলন্ত সেতু। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ প্রকল্পের তথ্য মতে, হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
আজকের সারাদেশ/৩ সেপ্টেম্বর