সকাল ৬:৫৮, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চবি ছাত্রলীগের  ‘বিতর্কিত’ সভাপতি আবারও হলে

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

নিজ দলের কর্মীদের ধাওয়ায় চলতি বছর মার্চে ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া, নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচনায় থাকা সেই রেজাউল হক আবারও ক্যাম্পাসে ফিরেছেন। থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুর রব হলের ২১১ নম্বর কক্ষ দখল করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা জানান গতকাল (১৬ সেপ্টেম্বর)  শনিবার সকালে শহীদ আব্দুর রব হলে রেজাউলকে দেখা যায়। তারা জানান, হলের দক্ষিণ পাশের দ্বিতীয় তলায় ২১১ নম্বর কক্ষের দরজা ভেতর থেকে আটকানো। দরজার বাইরের দিকে কালো কালি দিয়ে লেখা—সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আশপাশের কক্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রেজাউল হক ভেতরে অবস্থান করছেন। চার আসনের এ কক্ষটি তিনি একাই দখল করে থাকছেন।

ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা জানান, গত মার্চে রেজাউলের পা টেপানোর ছবি ভাইরাল হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষটি ভাঙচুর করে তাঁকে বিতাড়িত করেন। সে সময় তিনি শহীদ আব্দুর রব হলে অবস্থান করতে চাইলে ওই হল থেকেও তাঁকে বিতাড়িত করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন রেজাউল ক্যাম্পাসে অবস্থান করেননি। তবে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির কারণে গত ২৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ ছিল। এ সময়ে আবার ক্যাম্পাসে ফেরেন রেজাউল। তখন শহীদ আব্দুর রব হলের ২১১ নম্বর কক্ষটি দখল নেন।

এর আগে ২০১৭ সাল থেকে এ বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত রেজাউল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষ দখল করে থাকতেন। রেজাউল হকের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে। গত ১৫ মার্চ ছাত্রত্ব না থাকা ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সময়ের মধ্যে অছাত্র কাউকে ক্যাম্পাসে পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল। তবে এ ঘোষণা শুধু কাগজে-কলমে রয়ে গেছে।

শহীদ আব্দুর রব হলের ২১১ নম্বর কক্ষে নিয়মিত থাকার কথা স্বীকার করেন রেজাউল হক। তবে ছাত্রত্ব না থাকার পরও কীভাবে হলে থাকছেন, আগের হল কেন ছাড়লেন, এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

রেজাউলের হলে থাকার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে হল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।

এ বিষয়ে শহীদ আব্দুর রব হলের প্রাধ্যক্ষ মো. দানেশ মিয়া বলেন, রেজাউল হক রব হলে থাকেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কোন কক্ষে থাকেন, সেটি তিনি জানতেন না। এখন যেহেতু জানতে পেরেছেন, তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাববেন বলে জানান তিনি।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রাতে রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যর কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এই কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর পর থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কমিটি বাতিল চেয়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

রেজাউল হক ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি ২০১০ সালে স্নাতক ও ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। রেজাউল প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্যাম্পাসে থাকছেন।

গত বছরের ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেছিলেন পাঁচ তরুণ। এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজীম হোসেন। তিনি রেজাউলের অনুসারী ছিলেন। এ ঘটনায় আজীমকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত ২০ মার্চ রেজাউলের একটি ছবি আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। ছবিতে দেখা যায়, রেজাউল হলের কক্ষের বিছানায় শুয়ে মুঠোফোন দেখছেন। দুই পাশে বসে তাঁর পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা শামীম আজাদ ও শফিউল ইসলাম। রেজাউলের দাবি, তিনি অসুস্থ থাকায় দুই নেতা তাঁর ‘সেবা’ করছিলেন।

আজকের সারাদেশ/ ১৭ সেপ্টেম্বর

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি