আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান বন্ধে কুমিল্লা সদর আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের আবেদনে সাড়া দেননি চেম্বার আদালত। আদালত ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এ সময় আদালত আবেদনকারী এমপি বাহারের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির সুযোগ আইনে দেওয়া হয়েছে। তাই ঘরের বউকে সসম্মানে ঘরে তুলুন।’
আদালতে এমপি বাহারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। শিক্ষকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। বাহাউদ্দিন বাহার এ আবেদন করেন।
তার পক্ষের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এছাড়া তিনি জেলা শিক্ষা বিষয়ক কমিটিরও সদস্য। এ কারণে তিনি হাইকোর্টের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে এ আবেদন করেছেন।
আবেদনের যুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোটার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। এখন যদি অন্য জেলা থেকে শিক্ষকরা বদলি হয়ে কুমিল্লায় আসতে থাকেন, তাহলে বহিরাগত শিক্ষকদের দ্বারা কোটা পূরণ হয়ে যাবে। এতে কুমিল্লার শিক্ষক নিয়োগপ্রার্থীরা বঞ্চিত হবেন।
এ কারণে কুমিল্লার স্থানীয় মানুষের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
শিক্ষকদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এই রিট মামলায় কোনো পক্ষ না। তাই তিনি এ আবেদন করতে পারেন না।
এর আগে আদালতের আদেশপ্রাপ্তির পাঁচদিনের মধ্যে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করা প্রাথমিকের ১০ নারী শিক্ষিকাকে যোগদানের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া আরেক শিক্ষকের যোগদানপত্রও গ্রহণ করতে বলেন আদালত। আদর্শ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে এই ১১ জনের যোগদানপত্র গ্রহণ করতে বলা হয়।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে বদলি করা ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জন শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ করার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর মশিউর রহমান, ফজিলত পারভিন, উম্মে কুলছুম, দিল আফরোজ, আমিনাতুর রহমানসহ ১১ জন শিক্ষক ওই রিট দায়ের করেন। রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ছয়জনকে বিবাদী করা হয়।
আজকের সারাদেশ /এসএম