আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
ছোট্ট মাইদার বয়স ৭ পেরিয়েছে মাত্র। এখনো স্বভাবজাত চঞ্চল, তবে দারুণ মেধাবী। এই অল্প বয়সেই মাত্র সাত মাস সময়ে সম্পূর্ণ কোরআন হিফজ (মুখস্থ) করেছে সে। পুরো নাম জান্নাতুল মাওয়া হলেও সবাই তাকে চেনে মাইদা নামে। তার এমন কীর্তিতে খুশি বাবা-মা থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকি ও সহপাঠীরা।
মাইদার গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ার পদুয়ায়। তবে মায়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন পাঠানপুর এলাকায় থাকে সে। গত বছরের নভেম্বরের শেষে দিকে স্থানীয় মহিউস সুন্নাহ ইসলামিক মাদরাসার বালিকা শাখায় হিফজ শুরু করেন মাইদা। গেলো এক বছরে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও রমজানের একমাসসহ মাদ্রাসা বন্ধ ছিল দুই মাসের বেশি। এরমধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে হিফজ সম্পন্ন হয় মাইদার। তার শিক্ষিকারা জানান, সব মিলিয়ে মাত্র সাত মাসেই পবিত্র কোরআন হিফজ শেষ করেছে সে।
মাইদার শিক্ষিকা হাফেজা সাবরিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘২০২২ সালের নভেম্বর থেকে হিফজ শুরু করে মাইদা। ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সে হিফজ শেষ করেছে। এর ভেতর ২ মাসের মত বিভিন্ন বন্ধ ছিল। তাছাড়া শারীরিক অসুস্থতা ও সপ্তাহিক ছুটিও ছিল। সেই হিসেবে সাত মাসেটলর মধ্যেই তার হিফজ সম্পন্ন হয়েছে। নাজেরা থেকেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম সে অন্য ১০ জনের চেয়ে একটু আলাদা।’
মাদরাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন বলেন, ‘মাদ্রাসাটা নিয়ে আমি অনেক কষ্ট করতেছি, মাইদা যে মাত্র ৭ মাসে হিফজ সম্পন্ন করেছে, এটা মনে পড়লেই আমার সমস্ত কাষ্ট মুছে যায়। কারণ সাধারণত একজন শিক্ষার্থীর পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করতে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগে। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, মাইদা এই মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা শেষ করে বাইরে চলে গেলেও আমরা তার খোঁজ কবর রাখব। সে যতটুকু পড়াশোনা করতে চাই, ততটুকু নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসায় হিফজের পাশাপাশি ইবতেদায়ী অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেন কোনো শিক্ষার্থীর হিফজ শেষ করতে করতে বয়সটা নষ্ট না হয়। ২০১৩ সালে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মত শিক্ষার্থী এই মাদ্রাসা থেকে হিফজ শেষ করেছে।’
মাইদার এমন অর্জনে খুশি তার বাবা-মা। তার এমন কীর্তিতে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ধন্যবাদ জানান মা শেফালী আক্তার।
আজকের সারাদেশ/২৭সেপ্টেম্বর/এএইচ