সকাল ৯:৪৮, বুধবার, ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চবিতে হল ছাড়ার নির্দেশ ‘থোড়াই কেয়ার’ অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের

হাবীব আরাফাত, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন উপগ্রুপে সংঘর্ষ ও সাংবাদিককে মারধরের পর গেলো রোববার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ ও এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখনো বিভিন্ন আবাসিক হলে অবস্থান করছেন তাদের আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয় একই বিজ্ঞপ্তিতে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশনার পর বেশ কয়েকজন ছাত্রী আবাসিক হল ছাড়লেও ছাত্রত্ব চলে যাওয়া অনেকেই এখনো দিব্যি দখল করে আছে হল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া সময়ের তিনগুণ পেরিয়ে গেলেও হল ছাড়ার সেই নির্দেশনা ‘থোড়াই কেয়ার’ করছেন না এসব অছাত্র ও বহিষ্কৃতরা।

বুধবার সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায় আলাওল হল, এ. এফ. রহমান হল , শাহজালাল হল, সোহরাওয়ার্দী হল, শাহ আমানত হল, শহীদ আবদুর রব হল, মাষ্টারদা সূর্যসেন হলসহ প্রায় সবকটি ছাত্র হলে এখনো দেড় শতাধিক অছাত্র ও বহিষ্কৃতরা অবস্থান করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হল ছাড়ার নির্দেশনা সত্ত্বেও হলে অবস্থানের বিষয়ে জানতে তাদের একাধিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

নির্দেশনা সত্ত্বেও অছাত্র ওবহিষ্কৃতরা হল না ছাড়ায় না ছাড়ায় আবাসিক হলে আসন প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে ভোগান্তি বাড়ছে আবাসিক হলে আসন প্রত্যাশীদের। এমনই একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী নাছির উদ্দিন। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেন তিনি। নাছির আজকের সারাদেশকে বলেন, ‘ আমার বাড়ি ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে। শহরেও আমার বাসা নেই। গত কয়েক বছর ধরে আমি আবাসিক হলে আসন পাওয়ার চেষ্টা করেও কোনো আসন পায়নি। অথচ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা সত্ত্বেও এখনো অনেকের ছাত্রত্ব চলে গেলেও হলে আসন দখল করে আছে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘন্টা শেষে সোমবার আলাওল হলের শহিদুল নামের এক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন ওই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হল ছাড়তে বেঁধে দেওয়া সময় শেষে সোম,বার হলে অবস্থানকারী বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা শহীদুলের কক্ষ সিলগালা করতে যান প্রভোস্ট। এসময় তার সঙ্গে কয়েকজন আবাসিক শিক্ষকও ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলগ কর্মী নিয়ে প্রভোস্টসহ শিক্ষকদের গালাগাল ও হেনস্থা করে শহিদুল।

এই বিষয়ে আলাওল হলের হাউজ টিউটর সেলিমুল হক গণমাধথ্যমকে বলেন, ‘আমাদেরকে মা-বোন তুলে গালাগালি করছে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন বিষয় নিয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগে।’

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আমি এক বহিষ্কৃত ছাত্রের কক্ষ সিলগালা করতে যাই। তখন ওই ছাত্র প্রায় ২০ জনকে নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। আমাকে ও হাউজ টিউটরদের গালমন্দ করতে থাকে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে হাউজ টিউটররা হল থেকে চলে যান।’

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, আমরা বিষয়টি প্রভোস্ট স্যারের মাধ্যমে শুনেছি। আমরা তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়েছি কিন্তু তখন আবাসিক শিক্ষকরা চলে গিয়েছেন।

তবে এখনো যেসব অছাত্র ও বহিষ্কৃত যারা হলে অবস্থান করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি বলেন, প্রাধ্যক্ষরা সোমবার থেকে অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের বের করার প্রাথমিক উদ্যোগ নিয়েছেন। ছাত্রীদের হলে অবৈধভাবে কেউ নেই। অন্যান্য হলে যেসব অছাত্ররা অবস্থান করছে, তারা বেশিরভাগই গা ঢাকা দিয়েছে। সবার তালিকা তৈরি হচ্ছে।’

প্রভোস্টকে হেনস্তাকারী ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ সেশনের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী। ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে হলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এটা শুনে আমি হল থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে যাই। আমি একজন ছাত্রনেতা। আমাকে প্রভোস্ট স্যার ব্যক্তিগত অহংকার থেকে বহিষ্কার করেছে। তিনি নিয়মিত হলে আসেন না। হলের আসন বরাদ্দ দিচ্ছেন না তারা। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি তাদের বিভিন্ন কথাবার্তার মাধ্যমে অপমান-অপদস্ত করেন। হলের কর্মচারীরা ঠিকমতো কাজ করে না। আমি এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি আমার সাথেও খারাপ আচরণ করে। এর জেরে আমাকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে।’

‘মূলত তিনি হলের প্রতি উদাসীন সেটা আমি দেখিয়ে দেওয়ায় আমার প্রতি তার ক্ষোভ থেকে বহিষ্কার করেছে। আমি থাকিও না। জিনিসপত্র যা ছিল তা আমি আগেই নিয়ে এসেছি। আমি তখন ছিলাম না। আল আমিনের সাথে কয়েকজন জুনিয়র ছিল। তবে তারা খারাপ ব্যবহার করেনি। ’
আজকের সারাদেশ/২৭সেপ্টেম্বর/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাহাড়ে সেনাশাসন নয়, অপতৎপরতা প্রতিহত করতেই সেনাবাহিনী

চবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা

ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলেম-ওলামাদের ঢল