আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
অক্টোবর মাস । দেশের রাজনীতিক অঙ্গনের জন্য হতে যাচ্ছে টার্নিং পয়েন্ট । দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে এরই মধ্যে সরগরম রাজনীতির মাঠ। একদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে এখনও আগের অবস্থানেই অনড় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। অন্যদিকে নির্বাচন সামনে রেখে ক্রমাগত বিদেশি চাপ। সবমিলিয়ে দিন যতই যাচ্ছে ততই জটিল হচ্ছে ভোটের রাজনীতি।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আর ভোটগ্রহণ হবে জানুয়ারির শুরুতে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন এই নির্বাচন কমিশন বরাবরই বলে আসছে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে তারা বদ্ধপরিকর।
তবে অক্টোবর মাসকেই নির্বাচনি প্রস্তুতি নেওয়ার শেষ সময় বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। দলীয় সূত্র বলছে, অক্টোবর মাস নির্বাচনি টার্নিং পয়েন্ট। ফলে এ মাসটি দলের জন্য একটি মোক্ষম সময়। বিএনপির যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নির্বাচনি প্রস্তুতি গ্রহণ করাই এখন মূল টার্গেট।
অন্যদিকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবর মাসকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তারা। এটি হবে তাদের দিক থেকে সরকারবিরোধী টানা আন্দোলন-কর্মসূচির শেষ ধাপ। বর্তমানে রাজধানী ঢাকা ঘিরে সমাবেশ ও অঞ্চলভিত্তিক রোডমার্চ কর্মসূচি চলছে। ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ১৫ দিনের এ কর্মসূচি ৫ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে সমাবেশ থেকে পরবতী কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
একদিকে সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে অনড় আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিতে রাজি নয়। এর মধ্যে মার্কিন ভিসানীতি আরোপ শুরুর খবর রাজনীতির মাঠ আর উত্তপ্ত করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপির আন্দোলনের পালে যেন হাওয়া লেগেছে। দলটির নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে নানান হুমকি ও আল্টিমেটাম দিচ্ছেন। তবে আশানরুপ ফল না পেয়ে অক্টোবরেই আরও কঠিন কর্মসূচির পথে হাঁটছে দলটি।
অন্যদিকে বিএনপির আন্দোলনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞাকেও তোয়াক্কা করছে না আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, আমার নির্বাচন আমি করব, তুমি (যুক্তরাষ্ট্র) কে? আমরা কারও ভিসানীতির তোয়াক্কা করি না। এই দেশ গ্যাবনের আলি বোঙ্গোর দেশ নয়।
সার্বিক পরিস্থিতি সব মিলিয়ে বলা যায়, দুটি দলই অক্টোবরেই ভোটের রাজনীতির এসপার-ওসপার করতে মরিয়া। এর ফলে আগামী দিনে অরাজক পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, সংলাপই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।
আজকের সারাদেশ/একে