সকাল ৯:৪৯, বুধবার, ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরাও চাঁদে যাব: প্রধানমন্ত্রী

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

মহাকাশ বিষয়ক গবেষণায় জোর দিয়ে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদে মহাকাশ যান পাঠানোর প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা্

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যাশার কথা জানান।

অনুষ্ঠানে চাঁদে যান পাঠানো নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের এই দিকটা (মহাকাশবিষয়ক গবেষণা) যেন আরও উন্নত হয়। আমরা দেখি আমাদের আশপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়। তো আমরা কেন পিছিয়ে থাকব? আমরাও চাঁদে যাব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই দিকটা (অ্যারোস্পেস) যেন আরও উন্নত হয়, সে জন্য অ্যারোস্পেস বিষয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা দরকার। আমাদের লোকবল দরকার। এ ক্ষেত্রে আরও গবেষণাও দরকার।

‘সেটিকে মাথায় রেখে আমাদের যারা অত্যন্ত মেধাবী তরুণ-তরুণী আছে, তাদের উপযুক্ত শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে আমরা লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি।’

বক্তব্যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে আন্তজেলা বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিমান পরিবহনের হাব সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়। একসময় বেশি বিমান পরিবহন হতো হংকংয়ে, এখন দুবাই করে। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব হবে (বাংলাদেশ)।’

সরকারের আন্তজেলা বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আরও নতুন কিছু বিমান (উড়োজাহাজ) কিনব। এয়ারবাসের সঙ্গে এমওইউ সই হয়েছে। তারা আামদের কিছু লোনও দেবে।’

যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতির উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ, সড়কপথ, রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ, সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশযাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দিই।

‘হযরত শাহজালাল বিমাবন্দরের নানামুখী উন্নয়নের পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। জাপানের জাইকা আমাদের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে ঋণ দিয়েছে, আমরাও কিছু বিনিয়োগ করেছি।’

বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২৯ বছর যারা ক্ষতমায় ছিলেন, তারা দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যেতে পারেনি। আমরা এ দেশের মানুষকে সব দিয়েছি। আমরা ছিয়ানব্বই সালে ক্ষমতায় এসে দেখি বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ছিল না। আমরা সরকারে এসেই বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।

‘চট্টগ্রাম এবং সিলেট এই দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল—এ সময়টায় বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ৯৬ সালের পূর্ব পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল সেটা একটু দেখবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিমানবন্দর আরও পর্যাপ্ত আধুনিক, সুযোগ-সুবিধা যাতে সৃষ্টি হয়, তার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ আমাদের দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা বসবাস করে। তারা বিভিন্ন দেশে কাজ করে। আমাদের রেমিট্যান্স পাঠায়। তারাও যাতায়াত করে।’

বক্তব্যের আগে শনিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল এলাকায় এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় দেশীয় গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন সরকারপ্রধান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য বিষয়েও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আজ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সারা বিশ্ব চিন্তিত। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ করেছি। ২০২১ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের মর্যাদা পেয়েছি। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রা শুরু হবে। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে, সে লক্ষ্য নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’

সরকারের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। এভিয়েশন খাতের আরও উন্নতি হোক। আওয়ামী লীগই দিয়েছে। মানুষের মধ্যে একটা আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি করে দিয়েছি। বিশ্বের বুকে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিমানবন্দরে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেয়া হয়। তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে আরও এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়া যাবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে টার্মিনালের করিডোর ঘুরে দেখেন। বিমানন্দরের প্রক্রিয়া অনুযায়ী তিনি লাগেজ চেকিং করান, বোর্ডিং পাস নেন এবং যথারীতি ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে কাউন্টার পার হন।

পরে প্রি বোর্ডিং সিকিউরিটি স্ক্যান করিয়ে চলন্ত ওয়াকওয়ে পার হয়ে বোর্ডিং ব্রিজে যান প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় টার্মিনালের বিভিন্ন স্পটে আলোকচিত্রে বিমান ও বিমানবন্দরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী এগুলো অবলোকন করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে নানা বিষয়ে ব্রিফ করেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।

বিমানবন্দরের এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে তৃতীয় টার্মিনাল প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান সরকারপ্রধান। সেখানে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত লোকজন দাঁড়িয়ে ঠোট মেলান। পরে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বিমান সচিব মেকাম্মেল হোসেনসহ।

আজকের সারাদেশ/০৭অক্টোবর/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাহাড়ে সেনাশাসন নয়, অপতৎপরতা প্রতিহত করতেই সেনাবাহিনী

চবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা

ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলেম-ওলামাদের ঢল