সাইফুল আফ্রিদি, কক্সবাজার
অপু-দূর্গার দল আর নিরাপদ নেই কক্সবাজার শহরে। তাদের উৎসাহিত, প্রফুল্লচিত্তের সুযোগ নিতে চারপাশে যেন আড়িপাতা শুরু করেছে অপরাধচক্র। ট্রেন দেখার লোভ দেখিয়ে টার্গেট করছে শিশুদের। সম্প্রতি অপহরণও করেছে মিনহাজ নামক এক ছোট্ট শিশুকে। ঘাতক, অপরাধচক্রদের জন্য এখন শিশুদের আনন্দই যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ৮ডিসেম্বর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চাকরি দেওয়া রোহিঙ্গা এক যুবক তার মালিকের ছোট ছেলেকে ট্রেন দেখতে নিয়ে যাওয়ার নামে অপহরণ করে। পরে মুক্তিপণ দাবি করেন ৫ লাখ টাকা।
গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া এক তথ্যে জানা যায়, মোহাম্মদ নুর (২১) নামক এক রোহিঙ্গাকে চাকরি দেন লোহাগড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ফরিদ। পরে ওই রোহিঙ্গা তার মালিকের ছেলে মিনহাজকে ট্রেন দেখানোর লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মুঠোফোন দাবি করে ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জনিয়েছেন, রোববার গভীর রাতে কক্সবাজারের একটি রিসোর্ট থেকে অপহৃত শিশু ও অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
অপহৃত আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ (৭) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বাগান পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ফরিদুল আলমের ছেলে। গ্রেফতার মোহাম্মদ নুর উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-৯ এর বাসিন্দা শাহ আলমের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানায়- গত ৮ ডিসেম্বর চুনতি এলাকার মুরগির ফার্ম থেকে সম্প্রতি চালু হওয়া ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেন দেখার কথা বলে শিশু মিনহাজকে নিয়ে যায় নুর। তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরানোর পর মুঠোফোনে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। দুই ধাপে পরিবারটি ৪০ হাজার টাকা পাঠায়। তারপরও শিশুটিকে ছেড়ে দেয়নি অপহরনকারী। তারপর থেকে খোঁজ না পেয়ে থানায় অভিযোগ করে পরিবার। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। তদন্তের এক পর্যায়ে কক্সবাজার পৌর শহরের হোটেল-মোটেল জোনের প্রিন্স রিসোর্ট নামে একটি হোটেলের একটি কক্ষ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণকারী মোহাম্মদ নুরকেও গ্রেফতার করা হয়।
৪০ ঘন্টার অভিযানের কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন- ‘রোহিঙ্গারা বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে চাকরি ও বসবাস শুরু করেছে। যার কারণে দ্রুত অপরাধ করে পালানোর সুযোগ থাকে। প্রায় ৪০ ঘন্টার অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যথায় প্রাণ ঝুকিতে ছিল।
পুলিম সুপার আরও বলেন- ‘গ্রেফতার নুরের ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় অন্যকোন চক্র রয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আজকের সারাদেশ/১১ডিসেম্বর/এএইচ