সাইফুল আফ্রিদি:
একজন আদর্শিক বাবা ছেলের কাছে আয়না সমান। বাবা যেমন ছেলেও হতে চায় তেমনই। বাবাই হয়ে উঠেন ছেলের কাছে আদর্শ। বাবার আদর্শে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মাস্টার,জর্জ,ব্যরিস্টার, এমপি, মন্ত্রী কত কিছুই না হতে দেখেছে মানুষ । এমনকি কি কেউ দেখেছে যে বাবার আদর্শে ছেলে হয়ে উঠেছে অস্ত্র কারিগর! আশ্চর্যজনক হলেও এটাই সত্যি। বাবার আদর্শে এবার ছেলে হয়ে উঠলেন এক বড় অস্ত্র কারিগর। এমনই একটি ভয়ংকর রহস্যের উন্মোচন করেছেন র্যাব-১৫।
গত ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নে অস্ত্র কারখানায় ১৬ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র কারখানাসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্র কারিগর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তবে র্যাবের জালে আটকা পড়েনি সেই অস্ত্র কারখানার মালিক রাঘব বোয়াল মনিরুল।
সূত্র বলছে, মনিরুল হকের দাদাও ছিলেন অস্ত্র কারিগর। দাদার কাছ থেকে সেই অস্ত্রবিদ্যা রপ্ত করেন মনিরুলের বাবা আব্দুল জলিল। এরপরে বংশ পরম্পরায় বাবার আদর্শে দীক্ষিত হন মনিরুল। বাবার কাছ থেকে অস্ত্র বানানো আয়ত্ত করে খোলে বসেন অস্ত্র কারখানা। একই সাথে হয়ে উঠেন প্রধান অস্ত্র কারিগর ও অস্ত্র কারখানার মালিক। ঈদগড়ের গহীন অরণ্যে জনমানব শূন্য একটি জায়গায় স্থাপন করেন কারখানা। সেখানে বানানো হয় দামি দামি অস্ত্র। সেসব অস্ত্র বিক্রি করা হয় দেশের নানান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে।
শুধু মনিরুল নয়, মনিরুলের ছোট ভাই মালেশিয়া ফেরত শাহাবউদ্দিনও ভাইয়ের কাছে শিখছেন অস্ত্র বানানো। পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী লাল মিয়াকেও ভিড়িয়েছেন অস্ত্র ব্যবসায়। দৈনিক ৫ শ টাকা মজুরিতে কাজ করেন বলে জানিয়েছেন লাল মিয়া। বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে বানানো হয় এসব অস্ত্র। প্রতিটি অস্ত্র বিক্রি করে ৩০-৩৫ হাজার টাকায়।
স্থানীয় সূত্র বলছে, নব্বই দশক থেকে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে অস্ত্র তৈরির ব্যবসা চালিয়ে আসছেন মনিরুল। শুধু তার আপন ছোট ভাই নয়, মনিরুলের হাত ধরে উঠে আসছেন নতুন নতুন অস্ত্র তৈরির আরো অনেক শিষ্য। কালু,বাবুল ছাড়াও ওই কারখানায় আরো দুইজন নতুন লোক অস্ত্র কারিগর হিসেবে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন অস্ত্র কারিগর শাহাব উদ্দিন।
আজকের সারাদেশ/একে