আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনর্নিরীক্ষণের ফল আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে। সব শিক্ষাবোর্ড একযোগে এই ফল প্রকাশ করবে। তবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের এক শিক্ষার্থীর পুনর্নিরীক্ষণের ফলের দিকে সবার যেন আলাদা নজর। নক্ষত্র দেব নাথ নামের ওই শিক্ষার্থী এই শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথের ছেলে। গত কদিনে নক্ষত্রের পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন নিয়ে কম তোলপাড় হয়নি। ফলে তাঁর ফল কি আসছে সেটি নিয়ে সবার আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষাবোর্ডের সচিব নক্ষত্র দেব নাথ এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে তিনি একটি বিষয়ে জিপিএ-৫ পাননি। সেজন্য সচিবের পরিবার পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে চায়। কিন্তু পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে গিয়ে দেখতে পায়, কে বা কারা আগেই নক্ষত্র দেব নাথের ছয় বিষয়ের ১২টি পত্রের আবেদন করে ফেলেছে। এ নিয়ে সচিবের স্ত্রী বনশ্রী নাথ পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্তে রয়েছে পুলিশ।
এদিকে তদন্তের অংশ হিসেবে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমার সই করা একটি চিঠি পাঠানো হয় বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে। সেই চিঠিতে কোন নম্বর ব্যবহার করে ওই শিক্ষার্থীর হয়ে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। তবে শিক্ষাবোর্ডর একটি সূত্র জানিয়েছে, সেই চিঠির উত্তর এখনো দেয়নি বোর্ড। এরই মধ্যে আজ পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ হচ্ছে।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন অন্য কেউ করায় সচিব ও তাঁর পরিবার কেন শঙ্কিত সেটি নিয়ে দুই ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। একপক্ষ মনে করেছেন পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিষয়, সেটি অন্য কেউ করা মানে সচিবকে বিব্রত করার প্রচেষ্টা। তবে অন্য পক্ষ বলছে, বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছেন সচিব ও তাঁর পরিবার। যদি ফলে কোনো বিরাট বিভ্রান্তি না থাকে তাহলে সচিব এমনটি করতেন না। তাঁদের ধারণা সচিবের ছেলের ফল যেটা প্রকাশ হয়েছে সেটি আসল ফল নয়।
এরই মধ্যে সচিব বিভিন্ন মাধ্যমে যারা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন তাঁদের সাইবার আইনে মামলা করার হুমকি দিলে অভিযোগ করা ব্যক্তিদের সন্দেহ আরও দানা বাঁধে। তাঁরা সচিবের পুনর্নিরীক্ষণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
ছেলের ফলাফলের ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথ আজকের সারাদেশকে বলেন, ‘বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। বাকি বিষয় চেয়ারম্যান দেখছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
একই বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন, ‘সচিবের ছেলের ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের ঘটনাটি পুলিশ তদন্ত করছে । কেউ জড়িত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ২৬ নভেম্বর চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পরদিন অর্থাৎ, ২৭ নভেম্বর ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়।
পুননিরীক্ষীন ফলাফলে সি জি পি এ পরিবর্তিত হয়েছে ৮৮৭ জন পরীক্ষার্থীর, জিপিএ পরিবর্তিত হয়েছে কিন্তু সিজিপিএ পরিবর্তিত হয়নি ২০৮ জন, নতুন করে জিপিএ 5 পেয়েছে ৭৯ জন
( ৪ জিপিএ ৪.৯৯ পর্যন্ত আগে যাদের ছিল), ফেল থেকে পাশ করেছে ১৫২ জন।
আজকের সারাদেশ/একে