বিকাল ৩:৫৫, রবিবার, ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম ২: নানা নাটকীয়তার পর নেতাকর্মীদের নৌকা নিয়ে মাঠে থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পরও মাঠেই থাকছে নৌকা। নৌকা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, সব প্রার্থীরা মাঠে থাকবে,  অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটাররা যাকে ভোট দিবেন তিনিই সংসদ সদস্য হবেন। দলীয় প্রধানের এমন নির্দেশনায় দারুণ খুশি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও। 

রোববার দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী তাদের মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেন। 

চট্টগ্রামের একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে ফটিকছড়ি আসন থেকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এর আগের দুই সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মহাজোটের মনোনয়ন পান তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তাই শরীক দলগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করলে আসনটি আবারও তরীকতের হাতে যেতে পারে ধারণা ছিল রাজনৈতিক বিশ্লষকদের। কিন্তু শরীকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে এবার কোনো আসন পায়নি তরীকত ফেডারেশন। এরমধ্যে চাউর হয় আসনটি পেতে যাচ্ছেন সদ্য আত্মপ্রকাশ করা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারী। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেও সনির মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি আওয়ামী লীগ। 

পরবর্তীতে প্রতীক বরাদ্দের পর দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন সনি।  এরমধ্যে ২৮ ডিসেম্বর জেলা-উপজেলার নেতাদের ফোন করে সনিকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগের দিন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাত করেন বিএসপির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারী। একতারা প্রতীক নিয়ে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন তিনি।  এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ফটিকছড়ি আসনে সুপ্রিম পার্টিকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া খবরকে গুজব দাবি করে ২৮ ডিসেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেই সমাবেশে জেলা পর্যায়ের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের ঘন্টা দুয়েক পরই জেলা-উপজেলার নেতাদের কাছে ফোন করেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

নির্বাচনী প্রচারণা শেষের এক সপ্তাহ আগে দলের উচ্চ মহলের এমন সিদ্ধান্তে বপজায় ক্ষুব্ধ হন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী মাঠে সরব থেকে নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ারের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যেতে থাকেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে সনি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বা চিঠি না আসা পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে অনড় থাকার কথা জানায়। তবে সুপ্রিম পার্টি জানায়, দ্রুতই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে একতারা’য় ফিরবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

এরমধ্যে রোববার গণভবনেে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আমিনুল ইসলাম এবং টি এম পেয়ারুল ইসলাম। সেসময় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম-২ আসনে সব প্রার্থীকে মাঠে থাকার কথা জানান,  তাছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেন।  ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরি বলেন, ‘সবাই নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা এসেছে। এটাই নেত্রীর পক্ষ থেকে চূড়ান্ত নির্দেশনা। আমিন ভাই চর পেয়ারু ভাই নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন আজকে, তাদের নেত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন সবাই যেন নৌকার পক্ষে কাজ করেন। ’

এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ টি এম পেয়ারুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও তার নির্দেশনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অন্য একটি কাজে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আগে কী হয়েছে তো আমি জানি না। আদৌ আপা আগে ফোন দিয়েছিলেন কিনা সেটাও জানি না। তবে পত্রিকায় দেখেছি। আমাদের যেটা বলেছেন, তা হলো নির্বাচন হবে, নির্বাচনে যিনি জিতে আসেন তিনি এমপি হবেন। কেউ তো আর চাইলে নৌকা মুছতে পারবে না, প্রতীক তো ব্যালটে চলে আসছে।’

আওয়ামী লীগের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির দপ্তর সম্পাদক মো. ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘ওরা বিএসপিকে সমর্থন দিয়েছিল সেটা জানি। আজ কী হয়েছে বা আওয়ামী লীগের বক্তব্য কী তা তো আমি জানি না৷ বিস্তারিত না জানায় কিছু বলতে পারছি না।’

এদিকে দলীয় প্রধানের চূড়ান্ত নির্দেশনায় দারুণ খুশি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা৷ তাদের দাবি, গত দুই মেয়াদে শরীকদলের প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের নানা বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। তারও আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মনোনয়ন পেলেও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। এতে টানা তিন মেয়াদে দল ক্ষমতায় থাকলে ফটিকছড়িতে তার সুফল পাননি নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি এবং কাঞ্চন নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরফাত উদ্দিন মামুন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলের শেষ ভরসা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ওনার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা আমাদের। দীর্ঘদিন ধরে দল ক্ষমতায় থাকলেও ফটিকছড়িতে আমরা দলীয় সংসদ সদস্য পাইনি এখনও।  তাই এবার যে কোনো মূল্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সনি আপুকে বিজয়ী করতে হবে৷ এই আসনে নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা সুযোগ সুবিধা থেজে বঞ্চিত ও অবহেলিত। এবার সনি আপুর হাত ধরে সেই বঞ্চনার অবসান চাই৷’

আজকের সারাদেশ/৩১ডিসেম্বর/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

সাড়ে ১৬ হাজার ‘গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার করা হবে: আসিফ নজরুল

চবিতে স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন অব লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার দায়িত্বে সাকিল-জিসান

কথিত আন্দোলন আর মবের মহড়া শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ

এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে শহীদ তানভীর হত্যা মামলার আসামিরা

চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলের নেতৃত্বে ৩৫ মামলার আমামি

সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেসের প্রথম দিনে আয় প্রায় ৫ লাখ

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতরা পাবেন আজীবন চিকিৎসা ভাতা

বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য

কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকে ভাটা, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বোয়ালখালী পৌসভা নানা অনিয়মে গিলে খেয়েছে ‘সিন্ডিকেট’