সকাল ৮:৪৩, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০০ ভোটও পাননি ১২ প্রার্থী

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মোহাম্মদ মহিবুর রহমান বুলবুল। তিনি লড়েছিলেন চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চাঁন্দগাও) আসনে। কিন্তু বুলবুলের প্রতীক ডাবে ভোট দিয়েছেন মাত্র ২৪ জন ভোটার। যেটি ওই আসনের প্রদত্ত ভোটের ০ দশমিক ০৪ শতাংশেরও কম।

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে নির্বাচন করা আরেক বুলবুল-শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর ভাগ্য অবশ্য কিছুটা ভালো। বাংলাদেশ মুসলীম লীগের (বিএমএল) এই প্রার্থী পাঞ্জা (হাত) প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬ ভোট। অথচ এই আসনে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬২টি। সে হিসেবে জুলফিকারের পাওয়া ভোট প্রদত্ত ভোটের ০ দশমিক ০৩ শতাংশের একটু বেশি।

শুধু এই দুই প্রার্থী নয়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে এবার নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে এবার ১২জনই ১০০ ভোটও পাননি। নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে আওয়ামী লীগসহ ২০টি দল এবং স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১২৫ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। সে হিসেবে প্রায় ১০ শতাংশ প্রার্থীই ১০০ ভোটের চেয়ে কম ভোট পেলেন।

আর ভোটের সংখ্যাটা একটু বাড়িয়ে ২০০ তে নিয়ে গেলে প্রার্থীদের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।চট্টগ্রামে সবমিলিয়ে ৩০জন প্রার্থী এবার ২০০ বা তার কম ভোট পেয়েছেন। তবে তাঁদের থেকে কিছুটা ভোট বেশি পেয়ে এই তালিকায় নিজের নাম ‘লেখাতে পারেননি’ তিনবারের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বহুল আলোচিত বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের এই চেয়ারম্যান পেয়েছেন ২৩১ ভোট।

২০০ ভোটও পাননি ৩০ প্রার্থী:

দুজনের কথা তো আগেই বলা হলো, এবার বাকি ২৮ জন কে, যারা ২০০ ভোটও পাননি তাঁদের নামগুলো দেখা যাক।

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন নুরুল করিম আফছার। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে কোনো সুবিধাই করতে পারেনি নতুন দলটির এই নেতা। পেয়েছেন মাত্র ১৯৯ ভোট। এই আসনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মো. ইউসুফ টেলিভিশন প্রতীকে অংশ নিয়ে পেয়েছেন ২০০ ভোট। তাঁর চেয়ে পাঁচ ভোট বেশি পেয়েছেন ইসলামিক ফ্রন্টের আব্দুল মান্নান।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে অংশ নিয়ে মাত্র ১৩৫ ভোট পেয়েছেন এম এ ছালাম। বিএসপির মোহাম্মদ নুরুল আনোয়ার তো একশর গন্ডিতেই আটকে গেছেন। তিনি পেয়েছেন ৭০ ভোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকে অংশ নিয়ে মোহাম্মদ মোকতাদের আজাদ খান পেয়েছেন দেড়শ ভোট আর ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আব্দুর রহীম পেয়েছেন ১১৭ ভোট।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া পেয়েছেন ৭৪ ভোট। একই আসনে তৃণমূল বিএনপির সোনালী আশ প্রতীকের রাজীব চৌধুরী পেয়েছেন ১১৩ ভোট। আর বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী ছৈয়দ মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জেহাদী পেয়েছেন ১৩৩ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে জাতীয় পার্টির আবু জাফর মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ পেয়েছেন ১৬২ ভোট। ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশের হয়ে চেয়ার প্রতীকে অংশ নিয়ে মোহাম্মদ আবুল হোছাইন পেয়েছেন ১২১ ভোট। তরিকত ফেডারেশনের ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ফারুক ‘নার্ভাস নাইন্টিজের’ শিকার হয়েছেন, পেয়েছেন ৯৪ ভোট। বিএসপির মোহাম্মদ আয়ুব অবশ্য তাঁদের ছাড়িয়ে গেছেন, পেয়েছেন ১৯৬ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ‍মুক্তিজোটের ছড়ি প্রতীকে অংশ নিয়ে মো. জসিম উদ্দিন পেয়েছেন ৮৬ ভোট। বাংলাদেশ কল্যান পার্টির হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী পেয়েছেন দেড়শ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী এম জিল্লুল করিম শরীফি পেয়েছেন ৮৪ ভোট। তার থেকে কিছু ভোট বেশি পেয়েছেন এনপিপির মুহাম্মদ মামুন আবছার চৌধুরী (১০৬) ও ইসলামী ঐক্যজোটের মো. শফকত হোসাইন চাটগামী (১১৪)।

চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনএফের টেলিভিশন প্রতীকে নির্বাচন করে আবু মোহাম্মদ শামশুদ্দীন পেয়েছেন ৬৫ ভোট। চট্টগ্রাম-৮ আসনে চারজন প্রার্থী একশর চেয়ে কম ভোট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মহিবুর রহমান বুলবুলের নাম আগেই বলা হয়েছে। বাকি তিনজন হলেন, গুলশান-বনানীর সাবেক সংসদ সদস্য বিএনএফের চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ। তিনি পেয়েছেন মাত্র ৮৪ ভোট। এ ছাড়া কল্যান পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও এনপিপির মো. কামাল পাশা পেয়েছেন যথাক্রমে ৬৪ ও ৫১ ভোট। তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা অবশ্য সেঞ্চুরি পার করেছেন, পেয়েছেন ১২২ ভোট।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনে এনপিপির নারায়ন রক্ষিত পেয়েছেন ৭৬ ভোট। এ ছাড়া গণফোরামের উজ্জ্ল ভৌমিক ১৪৫ এবং তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত পেয়েছেন ১৬০ ভোট। চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী) আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মশাল প্রতীকে অংশ নিয়ে আনিছুর রহমান পেয়েছেন ১৫৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওসমান গণিও পারেননি ভোটারদের টানতে, পেলেন ১৫৫ ভোট।

২০০ এর নিচে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীদের আসনের বিভিন্ন ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত অপরিচিত প্রার্থী, জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণেই তাঁদের কেউ ভোট দিয়ে ভোট ‘নষ্ট করতে’ চাননি।

ভোটাররা বলেন, ‘কম ভোট পাওয়া এই প্রার্থীদের অনেকেই নির্বাচন এলে প্রার্থী হয়ে যান। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তাঁদের কোনো অবস্থান নেই। জনসম্পৃক্ততা গড়ে তোলার বিষয়েও তাঁদের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। সারাবছর তো দেখাই যায় না, এমনকি নির্বাচনের মাঠেও তাঁদের তেমন একটা দেখা যায়নি। পোস্টারেও তাঁরা ছিল না। তো নাম সর্বস্ব এসব দলের প্রার্থীকে কোন আশায় আমরা ভোট দিতে যাব?’

আজকের সারাদেশ/০৯জানুয়ারী/টিএইচ/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি