আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রামের এলাকায় চাঁদা না পেয়ে শতাধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জব্দের অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোবারক আলীর বিরুদ্ধে। অটোরিকশার চালক ও মালিকদের অভিযোগ, সময়মতো মাসোহারা না পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরের পর অভিযান চালিয়ে এসব অটোরিকশা জব্দ করে বিবিরহাট গরু বাজারে রাখেন কাউন্সিলরের লোক।
অটোরিকশার চালক ও মালিকদের মতে, কাউন্সিলর চাঁদা না পাওয়ায় তার নিজস্ব কর্মীবাহিনী দিয়ে রিকশাগুলো জব্দ করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রশ্ন হলো, কাউন্সিলর কি রিকশা আটক করার ক্ষমতা রাখেন? একমাত্র থানা ও ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব জব্দ করতে পারেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রিকশা মালিক বলেন, কাউন্সিলরের প্রতিনিধি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপক রায়হান, শরিফ ও দিলুর নেতৃত্বে শতাধিক ব্যাটারি রিকশা জব্দ করে বিবিরহাট গরু বাজারে রাখেন। পরে এর মধ্য থেকে কিছু রিকশা দিলু, সাবের আহমেদ ও শরিফ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছেন। পরে বাকি রিকশাগুলো গ্যারেজ মালিক এনাম ও শামসুকে এক লাখ টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে নিতে বলেন কাউন্সিলরের কর্মীরা। আসলে তারা সিটি কর্পোরেশনের রাজস্বের জন্য জব্দ করেননি। চাঁদা না পেয়ে জব্দ করে এখন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ড্যাম্পিং করার কথা বলছেন।
তবে জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করে কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোবারক আলী বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশা চলার কোন নিয়ম নেই। সেজন্য রিকশাগুলো জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সেগুলো ড্যাম্পিং করা হবে।
ব্যাটারি রিকশা জব্দ করার ক্ষমতা ট্রাফিক এবং থানা পুলিশের। আপনি কীভাবে এসব জব্দ করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুলিশের এখতিয়ার সেগুলো ধরা, কিন্তু পুলিশ সেগুলো ধরছে না। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অনুমোদিত রিকশার বাইরে কোন রিকশা চলাচল করতে পারবে না। তাই আমার কর্মীদের মাধ্যমে সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।
কর্মীরা টাকার বিনিময়ে ছাড়ার কথা বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, টাকার বিনিময়ে ছাড়বে কে বলেছে, তাকে আমার সামনে নিয়ে আসুন। টাকা দাবি করার বিষয়টি ভিত্তিহীন। সবগুলো রিকশা ড্যাম্পিংয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, আমরা যে ব্যবস্থা নিই না কেন, সেটা কাউন্সিলর অভিযোগ তুলতেই পারেন। কিন্তু আমাদের সাথে ব্যাটারি রিকশার কোন সম্পর্ক নেই। আর কাউন্সিলর কেমন, তা এলাকার মানুষ ভালো করে জানেন।
মুরাদপুর ও আঁতুরার ডিপুর দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক উত্তম কুমার দেবনাথ বলেন, আমরা যে অভিযান চালাই না, তা বলা কাউন্সিলরের ভুল হবে। আমাদের (ট্রাফিকের) জনবল সংকট রয়েছে। তাই আমরা মূল সড়কের বাইরে ফিডার রোডে অভিযান চালাতে পারি না। মূল সড়কে কোন অবৈধ রিকশা বা যান চলাচলের সুযোগ নেই। কাউন্সিলর মহোদয় ভেতরের রোড থেকে ধরে আনতে পারেন। আমরা এদিকে আসার সুযোগ দিই না।
আজকের সারাদেশ/১৯জানুয়ারী/এএইচ