আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের বলেছেন, ‘সংসদ সদস্যের সংখ্যার বিচারে বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আসন সংখ্যার বিচারে এবার সংসদে ৭৫ শতাংশই সরকার দলের। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ২১ শতাংশ; তারাও প্রায় সরকারদলীয়। ৩ থেকে ৪ শতাংশ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। এ সংসদ কখনও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।’
মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন স্পিকার নির্বাচনের পর নতুন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যান।
অধিবেশনে ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন জি এম কাদের। স্পিকারের দায়িত্ব প্রশ্নে জি এম কাদের বলেন, ‘তারা দলীয় আনুগত্যে স্পিকার হলেও বাহ্যিকভাবে চেষ্টা করতেন নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার। আমি আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি, আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন।’
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দুপক্ষই সামান হবে। একটা হলো সরকারি দল, আরেকটা হলো বিপক্ষ। তারা সংখ্যায়ও কাছাকাছি থাকবে। তাহলে তাদের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হবে। নিজেদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়াঝাটি হবে। সংসদে জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে। এটাই ছিল সংসদ তৈরি করার উদ্দেশ্য।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় সংসদ দল, মত নির্বিশেষে সবার মিলনস্থল। সেখানে সরকারি দল এক পক্ষ, সরকারের বিপরীত দল আরেক পক্ষ। নির্বাচন-পরবর্তী আসন সংখ্যায় ৭৫ শতাংশই সরকার দলের। আর ৩ থেকে ৪ শতাংশ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এখানে আসন বণ্টনে ভারসাম্যের… যতই সিমিট্রিক্যাল হোক, আসন বণ্টনে সিমিট্রিক্যালের অভাব হয়েছে। তাই এটাকে সম্পূর্ণভাবে সুন্দর বলা যাবে না।’
লাল ও সবুজের জাতীয় পতাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু লাল নয়, শুধু সবুজ নয়। যদি সরকারি দলকে লাল বলি, তাহলে এ সংসদ সম্পূর্ণ লালময়। সবুজটা শুধু ছিটেফোঁটা। বর্তমান সংসদ জাতিকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে তা আশঙ্কার বিষয়। ভালোভাবে বললে বলতে হবে, বিতর্কের বিষয়। দুই অংশের কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে, অর্থ্যাৎ সরকার ও বিরোধীদের সংসদ কর্মকাণ্ডের ব্যবধান কমাতে পারলে, যতটা কমবে ততুটুক সংসদ কার্যকর হিসেবে গণ্য হবে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘এ আশঙ্কা অবাস্তব নয়। যদি বলি এ সংসদ কখনও নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না। সরকার-বিরোধীরা যতবেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বা করবেন, ততটুকু হবে।’
এ সময় সংসদকে কার্যকর ভূমিকায় পরিচালিত করতে কিছু দাবি তুলে ধরেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘বিরোধীদের মতামতকে সংসদে তোলার সুযোগ দেবেন। সংসদের ভারসাম্যের ত্রুটি কমানোর প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।’
এ বিষয়ে স্পিকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
আজকের সারাদেশ/৩০জানুয়ারী/এএইচ