আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
৬ শিক্ষকের পদের বিপরীতে মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে চলছে ফেনীর সোনাগাজীর পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। যার ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না শিক্ষার নিয়মিত সুযোগ-সুবিধা।
জানা গেছে, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। দাফতরিক কাজে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলী শিক্ষা অফিসে গেলে ওই দিন সহকারী শিক্ষক রিপল চন্দ্র দাসকে একাই প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিসহ ছয়টি শ্রেণির পাঠদান করাতে হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক কম থাকায় আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না এবং রুটিন অনুসারে আমরা পড়তে পারি না। এমনকি বিদ্যালয়ের পিটিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ঠিকমতো হয় না।
জানা যায়, পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাসলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তাকে নাছির উদ্দিন লন্ডনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয় এবং সহকারী শিক্ষক বিউটি মজুমদার পিটিআইতে ডিপিএড ট্রেনিংয়ে থাকায় শিক্ষক শূন্য হয়ে যায় এ বিদ্যালয়টি। এর প্রেক্ষিতে দক্ষিণ চরদরবেশ আদর্শগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইউনুস আলী ও দক্ষিন পূর্ব চরচান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিপল চন্দ্র দাসকে পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লিখিতভাবে ডেপুটেশনে বদলি করা হয়।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়টিতে লিখিতভাবে ডেপুটেশনে ২জন শিক্ষক দিয়েছে কিছুদিন আগে। বিদ্যালয়টি চরাঞ্চলে হওয়ায় কোনো শিক্ষক এখানে থাকেন না। শত চেষ্টা করলেও তারা তদবির করে বদলি হয়ে চলে যান। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত শিক্ষক সংকট দূর করা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলী জানান, কিছুদিন হলো বিদ্যালয়টিতে যোগদান করেছি। এ বিদ্যালয়ের ৬টি শ্রেণিতে ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য আমরা কেবল দুইজন শিক্ষকই আছি। শিক্ষক কম থাকায় অভিভাবকরা এ বিদ্যালয়ে সন্তান ভর্তি করাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। এক শ্রেণির পাঠদানের সময় অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বসে থাকে। এজন্য বাধ্য হয়ে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে পাঠদান করাচ্ছি। দুইজন শিক্ষক ছয়টি শ্রেণিতে পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এভাবে তো শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা যায় না। আমাকে প্রশাসনিক কাজে উপজেলা সদর কিংবা বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। এমনকি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম করতে গিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। এতে করে পাঠদান ব্যাহত হয়।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ২জন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করা কষ্টকর। চরভৈরব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মারজাহান বেগমকে লিখিতভাবে ডেপুটেশনে পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার। ওই শিক্ষক নানা অজুহাতে এখনো যোগদান করেননি।
জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্ব বড়ধলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ২জন থাকায় ওই বিদ্যালয়ে আরও একজন শিক্ষককে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক যে এখনো যোগদান করেনি সেটি আমি জানতাম না। বদলির আদেশ অমান্য করার সুযোগ নেই। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।
আজকের সারাদেশ/এমএইচ