আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
“আমার একটি মোবাইল তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এটি লুকিয়ে রেখে বাথরুমে এসে কল দিয়েছি। বেশি কথা বলতে পারছি না। এটাই হয়তো শেষ কথা। আব্বু বেঁচে থাকলে দেখা হবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন”।
বাবার সাথে ফোনকলে এসব কথা বলছিলেন সোমালিয়ান দস্যুদের কবলে জিম্মি বাংলাদেশি নাবিক ফেনীরদাগনভূঞা উপজেলার ইব্রাহিম খলিল উল্ল্যাহ বিপ্লব। তিনি জাহাজের ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটে তার বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হয় বিপ্লবের।
বিপ্লব উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের আবুল হোসেনের বড় ছেলে। পরিবারে তার দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।
বিপ্লবের বাবা আবুল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটের দিকে আমার ছেলে ফোনকলে এ ঘটনা জানান। তখন সে বলে, জলদস্যুরা আমাদের জাহাজ আটক করেছে। আমার একটি মোবাইল তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এটি লুকিয়ে রেখে বাথরুমে এসে কল দিয়েছি। বেশি কথা বলতে পারছি না। এটাই হয়তো শেষ কথা। আব্বু বেঁচে থাকলে দেখা হবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
বিপ্লবের স্ত্রী উম্মে সালমা সোনিয়া বলেন, মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে তার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছে। এ ঘটনা শোনার পর থেকে আমার দুই ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। আমার স্বামীকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনতে সরকার এবং জাহাজ মালিকপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।
বিপ্লবের বড় ছেলে রেদোয়ান বিন ইব্রাহিম বলেন, রাতে আব্বুর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন আমাকে দুষ্টামি না করে মায়ের কথামতো চলতে বলেছেন। বাড়িতে আসার সময় আমার জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসবে বলেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আবুল হোসেনের চার ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বিপ্লব সবার বড়। ৮ বছর আগে তিনি জাহাজের চাকরিতে যান। গত চার মাস আগে বাড়িতে এসে একমাস ছুটি কাটিয়ে আবারও জীবিকার তাগিদে জাহাজে যান। বর্তমানে বিপ্লবের স্ত্রী দুই ছেলেকে নিয়ে ফেনী শহরে বসবাস করছেন।
আজকের সারাদেশ/একে