সকাল ৮:৫৪, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরির জন্য ভিসি শিরীণের পা ধরলেন ছাত্রলীগ নেতা, ভাইরাল ভিডিও

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
লিফটে চড়ে নিচে নামছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। সেই খবর জেনে লিফটের প্রবেশমুখে আগে থেকে অপেক্ষা করতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক তিন সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল, মুজিবুর রহমান ও রুমেল হোসেন।
শিরীণ আখতার লিফট থেকে বেরিয়ে আসতেই এগিয়ে যান ওই তিন নেতা। এর মধ্যেই কিছু বুঝে উঠার আগেই মইনুল তার মাথা শিরীণ আখতারের পায়ের কাছে নিয়ে হাত দিয়ে ধরে থাকেন। তাৎক্ষণিক ঘটনায় হতবিহ্বল শিরীণ আখতার চিৎকার ও চেঁচামেচি শুরু করলে মইনুল উঠে দাঁড়ান। তখন মুজিবুর রহমানও একইভাবে উপাচার্যের পা ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা উপাচার্যকে দ্রুত গাড়িতে তুলে দেন।

কিন্তু কোনোভাবেই যেন হাল ছেড়ে দিতে চাচ্ছিলেন না তিন ছাত্রলীগ নেতা। এবার তাঁরা গাড়ির দরজা আটকে ধরে কথা বলতে থাকেন। এসময় শিরীণ আখতারও উচ্চস্বরে নানা কথা বলে যাচ্ছিলেন। পরে গাড়িটি ধীরে ধীরে এগোতে থাকলে সামনে এসে বসে যান মইনুলরা। পরে অবশ্য হাল ছেড়ে দেন তাঁরা। এগিয়ে যায় উপাচার্যের গাড়ি।

চবির সাবেক উপাচার্যের পায়ে পড়া ও গাড়ি ঘিরে থাকার এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ধারণা করা হচ্ছে সিসি ক্যামরায় ধারণ করা ভিডিওটি শিরীণ আখতার উপাচার্য থাকাকালীন সময়কার। চাকরির জন্যই ছাত্রলীগের এই নেতারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার তাঁর মেয়াদের ৪ বছরে নিয়োগ দিয়েছেন ছয় শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী। যার বেশিরভাগই নিয়মবহির্ভূত৷ শেষ কর্মদিবসেও ৪৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

ওদের যেতে বলো নইলে আমি পুলিশ ডাকব:

ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো একটি বাসা বা বিল্ডিংয়ের লিফট থেকে বের হচ্ছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এসময় সেখানে আগেই দাঁড়িয়ে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক তিন নেতা। উপাচার্য বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়ে পড়ে যান ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল ও মুজিবুর রহমান। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক ছাত্রলীগ নেতা রুমেল হোসেন। পরে উপাচার্য তাদের হাত সরিয়ে দেন এবং দ্রুত গাড়িতে উঠে যান। এসময় উপাচার্যকে চিৎকার-চেচামেচি করতে শোনা যায়৷ উপাচার্যকে উচ্চকণ্ঠে ‘ওদের যেতে বলো নইলে আমি পুলিশ ডাকবো’ বলতেও শোনা যায়। উপাচার্য গাড়িতে উঠার পর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিন নেতা উপাচার্যের পথ আটকে রাখেন। এসময় কিছুক্ষণ আঙুল উঁচিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে তিন নেতাকে কথা বলতে দেখা যায়। পরে গাড়িতে চলে গেলে গাড়ির পিছন পিছন ছুটে যেতে দেখা যায় তিন নেতাকে।

তিন ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল, মুজিবুর রহমান ও রুমেল হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী। মইনুল ইসলাম রাসেল শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক একাকার গ্রুপের নেতা। এছাড়া মুজিবুর রহমান ও রুমেল হোসেন বগিভিত্তিক ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) গ্রুপের নেতা।

এদিকে পাঁচদিন আগে শিরীণ আখতারকে জড়িয়ে ফেসবুকে বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে মইনুলকে। সেখানে উপাচার্যের নিয়োগবাণিজ্যের ইঙ্গিত দিতে দেখা গেছে। যদিওবা পা ধরার ভিডিও ভাইরালের পর সেই স্ট্যাটাস আর দেখা যাচ্ছে না।

অনেকেই বলছেন পা ধরেও চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে শিরীণ আখতারের মেয়াদ শেষ হতেই হয়তো তাঁকে আক্রমণ করেছেন ছাত্রলীগের এই নেতা।

ফেসবুকে সমালোচনা:
ভিডিও ভাইরালের পর চাকরির জন্য উপাচার্যের পা ধরা নিয়ে অনেকে নানা মন্তব্য করেছেন।

বেলাল উদ্দিন নামের একজন লিখেছেন, ‘পুরো ছাত্রজীবন ছাত্ররাজনীতি করে এখন পায়ে ধরে চাকরি নিতে হয়।’

ড্রিমস রেইন নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পা ধরে চাকরি খোঁজে, আহারে।’

তামিম হোসেন নামের আরেক তরুণ তো কোনো রাখঢাক না রেখেই বললেন,
‘এই রকম গোলামির চাকরি থেকে রাস্তায় ঝালমুড়ি বিক্রি করা ভালো। কারণ সেই পেশায়ও এর চেয়ে বেশি সম্মান আছে।’

অবশ্য কেন পা ধরেছেন- সেটি জানতে ছাত্রলীগের এই নেতাদের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও ধরেননি তাঁরা। ফলে জানা যায়নি তাঁদের মন্তব্যও।

আজকের সারাদেশ/এমএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি