সকাল ৬:১৪, শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভাবের তাড়নায় শ্রমিকের কাজ করা চবির সেই রিয়াদ হলেন স্নাতকে পঞ্চম

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

এসএসসি পাশ করে পড়াশোনা ছেড়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম পাড়ি জমান ফেনীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন রিয়াদ। কাজ শুরু করেন থাই গ্লাসের দোকানে। হঠাৎ এক সিদ্ধান্তে জীবনের মোড় ঘুরে যায় রিয়াদের৷ এক বছর পর চট্টগ্রাম কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন রিয়াদ। কাজ আর পড়াশোনা একসঙ্গেই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কাজের ফাঁকে দোকানে বসেই করতেন পড়াশোনা। এভাবেই এইচএসসি শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাও দিলেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ার সুযোগ পেলেন। টিউশন-পরিবার সব কিছু সামলে সেই রিয়াদ স্নাতকে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে সম্মিলিতভাবে পঞ্চম স্থান অধিকার করলেন। সিজিপিএ অর্জন করলেন ৩.৫৮।

এ নিয়ে রিয়াদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একটি পোস্ট করেন। যা ইতোমধ্যে সবার নজর কেড়েছে। অনেকেই পোস্টটি শেয়ার করে রিয়াদের এই সংগ্রামমুখর জীবনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রিয়াদ বলেন, আসল লড়াই তো সবে শুরু! আগামী দিনগুলোর জন্য সবার দোয়া কামনা করছি। যাতে আসন্ন সব লড়াইয়ে উতরে যেতে পারি। রিয়াদ বলেন, ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পকেটে ৫০০ টাকা নিয়ে পড়াশোনা করবো না বলে চট্টগ্রাম শহরে আসি। বাস থেকে নেমেই ব্যাগটা রেখে থাই গ্লাসের দোকানে কাজে লেগে যাই। সেই থেকে কখনো মানুষের বাসায়, কখনো দোকানে, কখনো বিভিন্ন অফিসে, শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত, পুরো শহরে কাজ করে বেড়িয়েছি।

এরপর ঘটলো ভিন্ন ঘটনা, যেটা রিয়াদের জীবনকে বদলে দেয়। ভিন্নদিকে মোড় নেয় রিয়াদের জীবন। রিয়াদ বলেন, একদিন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে এক বাসায় কাজ করছিলাম। কাজ শেষ করতে রাত ১২টা বেজে গেছে। বাসার মালিকের ছেলের পরদিন এইচএসসি টেস্ট পরীক্ষা থাকায় তার একটু ডিস্টার্ব হচ্ছিল। এজন্য ছেলের অভিভাবক আমাদের ‘গণ্ডমূর্খ’ সম্বোধন করে এমন কিছু কথা শোনালেন তিনি, যা হজম করার মতো ছিল না। ব্যস, এটুকুতেই জেদ চেপে গেল! পড়াশোনা আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

তারপর এক বছর পরে ২০১৬ এসএসসি ব্যাচের সঙ্গে বিভাগ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন রিয়াদ। সপ্তাহে দুইদিন করতেন ক্লাস। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানে ডিউটির ফাঁকে পড়াশোনা করতেন রিয়াদ। এভাবেই দোকানে বসেই পড়াশোনা করে এইচএসসি পরীক্ষা দেন রিয়াদ।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে তিনমাসের জন্য ফেনী চলে যান রিয়াদ। বাড়িতে টিউশনের পাশাপাশি প্রস্তুতি চলতে লাগলো। ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পড়াশোনা করার সৌভাগ্য হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। শুরু হলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। প্রথম বর্ষ থেকেই টিউশন শুরু করতেন রিয়াদ। টিউশন আর পড়াশোনা, এভাবেই চলতে চলতে অবশেষে গ্রাজুয়েশন শেষ হলো রিয়াদের।

গতকাল বুধবার (৩ এপ্রিল) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে রিয়াদ সম্মিলিতভাবে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছেন। বর্তমানে একই বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত অদম্য মেধাবী এ তরুণ।

আজকের সারাদেশ/এমএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চবি, রাতের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ

কত টাকা পেল কোপা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-স্পেন?

ঢাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১৮২, মেডিকেলেও হামলা

চবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় চলছে ছাত্রলীগের হামলা

‘যৌতুক’ হিসেবে হবু জামাইকে বিসিএসের প্রশ্ন দিয়েছিলেন পিএসসি সদস্য

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

নাটোরে ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া কয়েক কেজি গাঁজা নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি

নির্বাচনী সমাবেশে প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি

স্বঘোষিত মেধাবীরা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পার্থক্য বুঝে না: ছাত্রলীগ সভাপতি

আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবে না: ছাত্রলীগ সেক্রেটারি