আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার সেই দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী মারা গিয়েছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৬টা ৭ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এর আগে গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজ শাহ এলাকায় হামলার শিকার হন কোরবান আলী। হামলার পরপরই মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া কোরবান আলীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় অবস্থিত মেডিকেল সেন্টার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
কোরবান আলীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর মামাতো ভাই জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা কোরবান আলীকে চিকিৎসকেরা আগেই ক্লিনিকালি ডেড ঘোষণা করেছিলেন। আর আজ সকাল ৬টা ৭ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন। এখন হাসপাতালের আনুষঙ্গিক কাজ শেষে তাঁর মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হবে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছেন। ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছুদিন আগে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন কোরবান আলীর ছোট ছেলে আলী রেজা রানা। এমন সময় দেখতে পান একদল কিশোর একজন পথচারীকে পেটাচ্ছে। তাদের মার সহ্য করতে না পেরে ওই লোকটি বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন। সেটি দেখে ওই লোকটিকে উদ্ধার করতে জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দেন রানা। পরে পুলিশ এসে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পরে তাঁরা সেদিন রাতেই রানার বাসার সামনে এসে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে যান। এরপর গত শুক্রবার বাসার পাশের দোকানে ইফতারি কিনতে গেলে সামির, অপূর্ব, রিয়াদ, সোহেল ও আকিবসহ কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্য রানার ওপর হামলা চালান। এ সময় রানাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে কোরবান আলীর ওপরও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা স্থানীয় যুবলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনায় ৮-১০জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আকবর শাহ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
আজকের সারাদেশ/টিএইচ/এমএইচ