আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
সোমালিয়ার জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়েছেন এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) আতিক উল্লাহ খান। সেই পোস্টের সঙ্গে চারটি ছবিও জুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সেই ছবিগুলোতে নাবিকদের বাংলাদেশের পতাকা হাতে হাসিমুখে উৎসব করতে দেখা গেছে। নাবিকদের নিরাপত্তা দেওয়া যুদ্ধজাহাজের অস্ত্রধারী সৈনিকেরাও ছিলেন।
বাংলাদেশ সময় বেলা ১টা ৪৪ মিনিটে ছয় লাইনের স্ট্যাটাসটি দেন আতিক উল্লাহ খান। সেখানে তিনি সৃষ্টিকর্তার পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বন্ধু, পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের। আর জানিয়েছেন কতটা মিস করছেন মাতৃভূমিকে।
আতিক উল্লাহ খান লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। অবিশ্বাস্য প্রচেষ্টার জন্য এসআর শিপিংকে ধন্যবাদ। বন্ধু, পরিবার এবং সমস্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ, যারা পুরো যাত্রায় প্রার্থনা করেছেন। ইউনাভফোর অপারেশন আটলান্টাকে ধন্যবাদ। আর ধন্যবাদ বাংলাদেশকে। তোমাকে ভালোবাসি এবং তোমাকে মিস করছি, বাংলাদেশ।
চারটি ছবির দুটি ছিল একান্তই আতিকউল্লাহ খানের। সেই ছবি দুটিতে হাসিমুখে বাংলাদেশের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। আরেকটি ছবিতে ছিলেন ২২ নাবিক। তাঁরাও হাসিমুখে বাংলাদেশের পতাকার হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে আরেকজন নাবিক সেই ছবিটি তোলায় তাঁকে সেখানে দেখা যাচ্ছে না। এই নাবিকদের পেছনে যুদ্ধজাহাজের দুই সৈনিককেও দুটি পতাকা হাতে দেখা যায়। পুরোপুরি দেখা না যাওয়া একটি পতাকা স্পেনের বলে ধারণা করছেন অনেকেই। আরেক ছবিতে ছিলেন সাতজন। তাদের হাতেও ছিল লাল সবুজের পতাকা।
১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি জিম্মি করার পর সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূলের কাছে নিয়ে যায় দস্যুরা। ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা প্রথম মুক্তিপণের দাবি জানায়। প্রায় দুই সপ্তাহ দর-কষাকষির পর মুক্তিপণের অঙ্ক চূড়ান্ত হয়।৩২ দিন পর সোমালিয়ার সময় শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিট) জাহাজটি থেকে দস্যুরা নেমে যায়। এরপরই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় এমভি আবদুল্লাহর দুই পাশে দুটি যুদ্ধজাহাজের পাহারায় সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করতে থাকে।
বহুদিনের অপেক্ষার পর মুক্তি। স্বাভাবিকভাবেই সব নাবিক আছেন উচ্ছ্বাসিত। তার কিছুটা যেন উঠে আসল প্রধান কর্মকর্তার লেখায়।