আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
আজ থেকে ১০ বছর আগে ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম এবার নিয়োগ পেয়েছেন চবির নতুন প্রক্টর হিসেবে। এ পদে অহিদুল আলম ঠিক কেমন হবেন- সেই প্রশ্ন উঠতেই আলোচনায় এলো সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে অহিদুল আলমের অনিয়মের বিষয়টি।
চবির ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় অহিদুল আলম ৫ বেলা দায়িত্ব পালন করলেও ১২ বেলার অতিরিক্ত ভাতা সাড়ে ১৭ হাজার টাকা আদায় করেছিলেন। যা নিয়ে তৎকালিন সময়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় চবির ওশানোগ্রাফি বিভাগের এ শিক্ষককে।
২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর চবির ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয় যা শেষ হয় ২৬ ডিসেম্বর। এই সময়ে কখনো এক বেলায় আবার কখনো দুই বেলায় মোট ১২টি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টররা এক বেলায় পরীক্ষা চলাকালে দায়িত্ব পালন করলে আড়াই হাজার টাকা করে পান। সেই হিসাবে পাঁচ বেলা দায়িত্ব পালনকারী অহিদুল আলমের পাওয়ার কথা সাড়ে ১২ হাজার টাকা। কিন্তু ১২ বেলায় দায়িত্ব পালন করছেন দেখিয়ে তিনি আদায় করেছিলেন ৩০ হাজার টাকা। তিনি ছুটিতে থেকেও ১৬ নভেম্বর এক দিন ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
তৎকালিন মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুল আজম খানের ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিতে অহিদুল সে বছর ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটি শেষে তিনি ২৫ নভেম্বর বিভাগে যোগদান করেন।
সেসময় মোহাম্মদ অহিদুল আলম দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে ওই কর্মশালায় প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান। সে হিসেবে তিনি ভর্তি পরীক্ষায় পাঁচ বেলা দায়িত্ব পালন করলেও ১২ বেলার টাকা তুলেছেন।
তৎকালিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সফিউল আলম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বিষয়গুলো প্রক্টরই দেখেন। তিনি যে রকম হিসাব পাঠান, সে অনুসারেই টাকা দেওয়া হয়।
অহিদুল আলমের অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক খান তৌহিদ ওসমান বলেছিলেন, ‘আমি তো ভেবেছিলেম সব সহকারী প্রক্টরই ১২ বেলা দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই সব সহকারী প্রক্টরের জন্যই আমি ১২ বেলা হিসাব করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিলাম।’
এ ঘটনার ১০ বছর পর রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ওশানোগ্রাফি বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম।
ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদারকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগামী এক বছরের জন্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলমকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর নিয়োগের পরপরই আলোচনায় আসে ড. অহিদুল আলমের ১০ বছর আগে সহকারী প্রক্টর থাকাকালীন অনিয়মের বিষয়টি।
আজকের সারাদেশ/এমএইচ