রাত ১০:৪৪, বৃহস্পতিবার, ২২শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়েটের ২ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সড়ক অবরোধ, ৯ দাবি না মানলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছে চুয়েট শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করায় কাপ্তাই এর সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে, সোমবার রাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে একটি বাসে আগুন দেয়। ঘটনার পরপরই চুয়েট ক্যাম্পাস ও আশপাশের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। সেসময় শাহ আমানত লাইনের চারটি বাসও আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।

দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচী ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও তৌফিকের মৃত্যুর ঘটনায় চলমান আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি ঘোষণা করেছে।

দাবিগুলো হলো-
পলাতক ড্রাইভার এবং তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার,  শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ভুক্তভোগীদের পরিবারকে যথার্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার এবং দাবি মেনে নিতে বাধ্য থাকবে শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষ। চুয়েট কর্তৃপক্ষকে বাদী মামলা করতে হবে।

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের দ্রুত প্রশস্থকরণ কার্যক্রম শুরু এবং এই রুটে দুরপাল্লার বাস ব্যতীত সকল লোকাল বাস (এবি ট্রাভেলস, শাহ আমানত ও অন্যান্য) চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

চুয়েট মেডিকেল সেন্টারে সকল প্রকার প্যাথলজিকাল পরীক্ষা, এক্সরে, ইসিজি ইত্যাদি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিতকরণ এবং এই মুহূর্ত থেকে সকল অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেনপূর্ন সিলিন্ডার, শ্বাস প্রদান যন্ত্রের ব্যবস্থাসহ সকল প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মেডিকেল সেন্টারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যায়ের চিকিৎসক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে অপ্রতুল হওয়ায় অতি দ্রুত শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪টি অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত করতে হবে।

চুয়েটের বাস সংখ্যা বৃদ্ধি, বিআরটিসি কর্তৃক শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, বাসের শিডিউল পুন:নির্ধারন করতে হবে।

প্রতিটি পয়েন্টে ট্রাফিক বক্স ও সড়ক পুলিশের অবস্থান নিশ্চিতকরণ এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। লাইসেন্স চেকসহ মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরো সড়ক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রনে থাকবে। এছাড়া রোড ডিভাইডার, স্পিড ব্রেকার, সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারন করে গাড়ীর স্পিডলক ও স্পিড মনিটরিং এর মাধ্যমে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আন্দোলনকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক সকল কার্যক্রম রিশিডিউল করতে হবে।

এখন থেকে সকল শিক্ষার্থীর যেকোনো প্রয়োজনে ছাত্রকল্যান পরিষদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় থাকতে হবে এবং এই ব্যাপারে ছাত্রকল্যান পরিষদের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের নিকট জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই দাবীগুলো মেনে নেওয়া পর্যন্ত এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার ও ঠিক কতদিনের মধ্যে এই কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়িত হবে তা নির্ধারন না করার আগ পর্যন্ত চুয়েটের সব শিক্ষার্থী পরীক্ষাসহ সকল ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বর্জন করবে।

আজকের সারাদেশ/এমএইচ