আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পর গত মাসের ১৯ তারিখ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় প্রফেসর শিরীণ আখতারকে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর আবু তাহের। নতুন উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই ‘ঝড় আসছে’ বুঝতে পেরে প্রশাসনিক নানা দায়িত্বে থাকা শিরীণের অনুসারী অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। পদত্যাগের প্রস্তুতিও নেন কেউ কেউ।
সবার ধারণা ছিলো উপাচার্য পট পরিবর্তন হয়েছে মানেই প্রশাসনিক পদগুলোতে পরিবর্তন আসবেই। এক মাস যেতে না যেতেই সেই পরিবর্তন শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বর্তমান উপাচার্য আগের প্রশাসনের লোকজনকে সরিয়ে নিজের পছন্দের মানুষদের বসানো শুরু করেছেন৷ গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ চার পদে নতুনদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে প্রক্টর ও তিন হলের প্রভোস্ট।
প্রক্টর পদে ছিলেন ভিসি শিরীণের মেয়ে টিনার আস্থাভাজন প্রফেসর নূরুল আজিম সিকদার। তাকে সরিয়ে পদায়ন করা হয়েছে বর্তমান উপাচার্যের নিজ এলাকার ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর অহিদুল আলমকে। এছাড়া প্রীতিলতা হলে আইন বিভাগের প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মামুনকে সরিয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর লায়লা খালেদা, এ এফ রহমান হলে ফার্মেসি বিভাগের মোয়াজ্জেম হোসেনকে সরিয়ে একাউন্টিং বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চবি প্রেসের প্রশাসক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর আনোয়ারুল ইসলামকে।
মঙ্গলবার নতুন করে পাঁছ জনকে সহকারী প্রক্টর করা হয়েছে। জানা যায় তারা সবাই আগের প্রশাসনের বিরাগভাজন ছিলেন এবং এর আগে ইফতেখার ভিসির প্রশাসনের লোক ছিলেন৷ তারা হলেন ওশানোগ্রাফি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. এনামুল হক। সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লিটন মিত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সহযোগী অধ্যাপক বিভাগের হেলাল উদ্দিন আহম্মদ, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রন্টু দাশ ও ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফাত রহমান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শীর্ষ পদগুলোতে বর্তমান উপাচার্যের পছন্দের লোকজন আসীন হবে। অতীতেও দেখা গেছে উপাচার্য পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে প্রশাসনিক পদগুলোতে পরিবর্তন এসেছিল।
হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ বলেন, নতুন উপাচার্য আসার পর নূরুল আজিম সিকদার নিজেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তারপর প্রায় এক মাসের মতো দায়িত্বে ছিলেন। এরপর তার জায়গায় আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে সদ্য সাবেক প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার বলেন, আমি আসলে প্রেসার নিতে পারছিলাম না। শিক্ষার্থীরা বেশি জ্বালাচ্ছিল। আর প্রক্টরিয়াল বডিও দূর্বল হয়ে পড়েছে। অনেকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। শেষ পর্যন্ত আমার সঙ্গে তিনজন ছিল। তাই উপাচার্যকে বলে সরে গেছি।
আজকের সারাদেশ/ইই/এমএইচ