আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
সোমালিয়ান দস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া এমভি আবদুল্লাহ’র ২৩ নাবিক ঈদুল ফিতরের নামাজ জামাতে আদায় করেছিলেন জাহাজেই। আর সেই ঈদের জামাতে ইমামতি করেন জাহাজের ফিটার মোহাম্মদ সালেহ আহমদ। তিনি জানালেন সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা।
ইমাম সালেহ আহমদ বলেন, মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছি এটার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। পুরো দেশ আমাদের জন্য দোয়া করেছে। সবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। আমরা মজলুম ছিলাম। রোজা অবস্থায় ছিলাম। ওই অবস্থায় দেশবাসীর জন্যও দোয়া করেছি। যাতে সবাইকে সুস্থ রাখেন, নেক হায়াত দান করেন।
ঈদের জামাতে ইমামতি প্রসঙ্গ তিনি বলেন, আমাদের ক্যাপ্টেন স্যার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঈদের নামাজ পড়াতে। কলিগরা সবাই সাপোর্ট করেছিলেন। আমি ঈদের নামাজ পড়িয়েছিলাম। এর আগেও জাহাজে ঈদের নামাজ পড়িয়েছি। আমাদের জাহাজে নির্ধারিত কোনো ইমাম থাকেন না। যারা নামাজ পড়েন, কলিগরা সাপোর্ট করলে জামাতে নামাজ পড়ানো হয়। তবে এবারের ঈদের নামাজ ছিল ভিন্ন প্রেক্ষাপটে, জলদস্যুদের বন্দিদশায় জিম্মি জাহাজে।
তিনি বলেন, জলদস্যুরা ঈদের নামাজ পড়তে দিছে। আমরা নামাজ পড়েছি। আত্মীয়-স্বজনকে মিস করেছি। ওই মুহূর্তে আমাদের দুশ্চিন্তা ছিল, আমরা জীবিত ফিরে আসবো কিনা! আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছি। মোনাজাতের মধ্যে আরবিতে দোয়া করেছি, আল্লাহ যেন জলদস্যুদের রহম করে। আমরা যেন মুক্তি পাই। আল্লাহ কবুল করেছেন। দেশবাসীর দোয়া ছিল। সরকারের সাপোর্ট ছিল। আমাদের কোম্পানির সাপোর্ট ছিল।
মুসলিম হওয়ায় জলদস্যুরা কিছুটা নমনীয় ছিল। এমন ধারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা জুলুম করে ওদের কাছে ধর্মকর্ম আর কী! আমরা ২৩ জন মুসলিম ছিলাম। রোজা অবস্থায় ছিলাম। এতে তারা একটু সফট ছিল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছিল।
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করেছিল। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে।