আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের মামলার আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে ১৫ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আসামিকে ছিনিয়ে নিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালান বলে দাবি পুলিশের।
শনিবার (৮ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চাতরি-চৌমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এরপর নেতাকর্মীরা আবার সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের একটি যানবাহন ভাঙচুর করে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আহত করেন।
পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িতরা অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে। এর আগে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের আনোয়ারা সেন্টার এলাকায় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে পালটাপালটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল আনোয়ারা উপজেলা হলেও প্রশাসনিকভাবে সেটি নগর পুলিশের বন্দর জোনের কর্ণফুলী থানার অধীন। সংঘর্ষের পর কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার আসামিদের ধরতে কর্ণফুলী ও আনোয়ারা থানা পুলিশ যৌথভাবে শনিবার রাতে অভিযান শুরু করে।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা জানান, মামলার এক নম্বর আসামি মোজাম্মেলকে ধরতে রাত ১১টার দিকে আনোয়ারায় টানেলের প্রবেশমুখে ভোজনবাড়ি নামে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে যায় পুলিশ। সেখানে আগে থেকে মোজাম্মেলসহ কয়েকজন নেতাকর্মী অবস্থান করছিলেন। পুলিশ তাকে আটক করতে গেলে নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এসময় রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বেরিয়ে আসেন। তিনিসহ নেতাকর্মীরা মিলে আসামি মোজাম্মেলকে ছিনিয়ে নেন।
শাকিলা সোলতানা বলেন, এর মধ্যে কয়েক শ নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হন। উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তারা পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে ধাক্কা দেন, গাছ দিয়ে আঘাত করেন এবং একপর্যায়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ-ছয় রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
শাকিলা আরও জানান, হামলায় আনোয়ারা থানার ওসি সোহেল আহমেদ ও কর্ণফুলী থানার ওসি জহির হোসেন আহত হয়েছেন। ইটের আঘাতে ওসি জহিরের হাতে ও শরীরের কয়েকস্থানে গুরুতর জখম হয়েছে।
কর্ণফুলী থানার ওসি জহির হোসেন বলেন, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা শুরু হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ উপস্থিত হওয়ার পর উনার লোকজন মারমুখী হয়ে ওঠে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখেছি, উনি ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন। এসেই তিনি আসামিকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন। ঘটনার পর আমরা সেখান থেকে চলে আসি। আমাকে এবং আনোয়ারার ওসি স্যারকে মেডিকেলে নেওয়া হচ্ছিল। তখন জানতে পারি, আবার হামলা হয়েছে। চৌমুহনী বাজার থেকে এসআরএফের (স্পেশাল রিজার্ভ ফোর্স) একটি গাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সেটিতে হামলা করে ভাঙচুর করে। সেখানে আরও চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।