আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে জাপানের তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি টিকা “কিউডেঙ্গা”র অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য গত ২ অক্টোবর এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে টিকাটি শিশুদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম বলেন, “৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এই টিকা। যে শিশুরা তীব্র ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত এবং উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করছে, তাদের ওপর এই টিকার ব্যবহার ফলপ্রসূ হতে পারে।”
এ বিষয়ে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিপ্পন ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেঙ্গু প্রতিরোধী টিকাটি তৈরি করেছে জাপানের তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। তারা এর নাম দিয়েছে “কিউডেঙ্গা”।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই ডোজের এই কিউডেঙ্গা টিকাটি সেরোটাইপ ২ ভেরিয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে এখানে অন্য তিনটি ধরনের উপাদানও যুক্ত রয়েছে। ডোমিনিকান রিপাবলিক, পানামা এবং ফিলিপাইনে ১ হাজার ৮০০ জন তরুণ-তরুণীর ওপর এই টিকার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। গবেষণার ফলাফল বলছে, টিকাটি নেয়ার পর ডেঙ্গুর চারটি ধরনের বিরুদ্ধে কমপক্ষে চার বছর সুরক্ষা দেয়।
এরপর এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার ২০ হাজারেরও বেশি জনের ওপর আরেকটি পরীক্ষা চালিয়ে দেখে তাকেদা। এতে দেখা গেছে, টিকা গ্রহীতাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার অনেক কম এবং এটি ৬১% পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। সেই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য কোনো পরীক্ষায় ঝুঁকির সম্ভাবনাও পাওয়া যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া আগেই এই টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড ও আর্জেন্টিনা।
অন্যদিকে, সম্প্রতি প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর চারটি ধরনের বিরুদ্ধে উপযোগী টিকা নিয়ে সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিন। টিভি-০০৫ নামের টিকাটি এক ডোজের বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।
বাংলাদেশে এ বছর মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৭ হাজার ২৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১৫৮ জন।
আজকের সারাদেশ/একে